ইনফিনিক্স হট 10 টি | Infinix Hot 10 T মধ্যবিত্তদের জন্য মার্কেটের সেরা স্মার্টফোন

প্রযুক্তির হাত ধরে দিন যত এগিয়ে যাচ্ছে মানুষের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার করার চাহিদা ততই বেড়ে যাচ্ছে । এখন আমরা প্রায় প্রতিটি মানুষের হাতেই স্মার্টফোন দেখতে পেয়ে থাকি । ভালো মানের স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি থাকলেও বর্তমানে আমাদের মাঝে ইনফিনিক্স একটি অন্যতম কোম্পানি । ইনফিনিক্স কোম্পানি বর্তমানে বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি ব্রান্ড । ইনফিনিক্স কোম্পানিটি সাধারণ মানুষের কথা ভেবে মার্কেটে রিলিজ করলো Infinix Hot 10 T । মিডিয়াম পারফরমেন্সের মধ্যে থাকা এই ডিভাইসটি উন্নত মানের ব্যাকআপ দিতে সক্ষম । বিশেষ চাহিদা মিটিয়ে একের পর এক মডেল উদ্ভাবন করতে হয় ব্র্যান্ডটিকে । মে , 2021 মডেলটিকে মার্কেটে রিলিজ করা হয় । Infinix Hot 10T মডেলটিকে ব্যবহার করে অনেকেই ইতিবাচক মতামত পোষন করেছে । স্মার্টফোনটির পারফরর্মেন্সের বিষয়ে রিভিউতে আলাপ আলোচনা করা হলো । জানতে হলে চোখ রাখুন ।


Infinix Hot 10 T Bangla Review with Price


এলইডি লুক এবং রেজুলেশন


মডেলটিতে আইপিএস এলসিডি টাইপ ডিসপ্লে রয়েছে । যার আকার 6.82 ইঞ্চি । ডিসপ্লের স্ক্রিন রেজুলেশন 720×1640 পিক্সেল এবং পিক্সেলের ডেনসিটি ঘনত্ব 263 পিপিআই । 90 হার্জ রিফ্রেশ রেট ব্যবহার করার কারণে টার্চটি খুবই দ্রুত কাজ করে থাকবে । এলসিডি প্যানেলটিতে ফুল এইচডি রেজুলেশন ব্যবহার না করার কারণে এইচডি ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে ‌‌। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে ফুল এইচডি অপশনটি পাবেন না । এই বিষয়টি আমাদেরকে কিছুটা হলেও ভাবনায় ফেলে দিবে । multi-touch এর মত সুবিধা রাখা হয়েছে ডিসপ্লেটিতে । এলসিডি প্যানেলটিতে সাপোর্ট করবে 16 মিলি কালার । স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে গুগলের তৈরি এন্ড্রয়েড ভার্সন 11 এবং XOS 7.6 মডেল । মিডিয়াটেক হেলিও চিপসেটের পাশাপাশি থাকছে অক্টাকোর প্রসেসর । 


বডি বিল্ড ডেকোরেশন


এই মোবাইলটির বডি বিল্ড ডেকোরেশনে পাওয়া যাবে চোখ ধাঁধানো ফিনিশিং । পার্সোনাল ভাবে আমার কাছে বডি ডেকোরেশন কিন্তু খুবই ভালো লেগেছে এবং আমি এটাও আশা করি আপনাদের কাছেও অনেকটা ভালো লাগবে । স্মার্টফোনটি আয়তনে 6.75 ইঞ্চি দৈর্ঘ্য , 3.05 ইঞ্চি প্রস্থ এবং 0.36 ইঞ্চি পুরুত্ব । হ্যান্ডসেটটির আকার ততোটা বেশি না হওয়ার কারণে হাতে নিয়ে ব্যবহার করতে অনেকটাই কমফরটেবল ফিল হবে । কেবলমাত্র হাতেই নয় এই মডেলটি আপনার পকেটেও খুব ভালোভাবে এঁটে যাবে । বিল্ড ম্যাটেরিয়ালে রয়েছে গ্লাস ফ্রন্ট এর পাশাপাশি প্লাস্টিক ব্যাক কভার এবং প্লাস্টিক ফ্রেম । বডিটির একটি বিষয় অনেকটা খারাপ লেগেছে আর সেটি হচ্ছে বডিতে কোন প্রটেকশন গ্লাস নেই যার কারণে অল্প আঘাটেই ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । মার্কেটগুলোতে ইনফিনিক্স এর এই নতুন মডেলটিকে কালো এবং সবুজ কালার ছাড়াও আরো অন্যান্য রঙে পাওয়া যাবে । 

ব্যাটারি কনফিগারেশন 


মোবাইলটিতে নন রিমুভেবল লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি টাইপ ব্যবহার করা হয়েছে যার ক্যাপাসিটিতে রয়েছে 5000mAh পাওয়ার । মোবাইলটির ব্যাটারি 18W ফাস্ট চার্জিং হবে । ব্যাটারি 100% চার্জ হয়ে গেলে 18 ঘন্টা গেমিং পারফরম্যান্স দিবে এবং 76 ঘন্টা কল করে কথা বলার সামর্থ্য রয়েছে । ব্যাটারি কনফিগারেশনের জন্য এই মোবাইলটিকে আমার বেস্ট বলে মনে হয়েছে । ব্যাটারি পারফরমেন্সের পাশাপাশি চার্জিং ফিচার খুবই ভালো । যদিও এখানে পাওয়া যাবেনা ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম । ইনফিনিক্স গ্রাহকেরা এই মডেলটির ব্যাটারি কনফিগারেশনে অনেকটাই পঞ্চমুখ । ব্যাটারি পারফরম্যান্সের জন্য এই মোবাইলটি সকলের কাছেই আলাদাভাবে পরিচিতি লাভ করতে সফল হয়েছে । ফুল চার্জে এই হ্যান্ডসেটটিকে 22 ঘণ্টা ব্যবহার করা যাবে ইন্টারনেট কানেকশন সংযোগ রেখে । ব্যাটারি পারফরমেন্সে আর একটু উন্নতি আনার জন্য তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম এর ব্যবহার করলে ভাল হতো ।


ক্যামেরা পারফরম্যান্স 


এই মোবাইলটির ক্যামেরা দিয়েে খুব সহজেই উজ্জ্বলময় ছবি ক্লিক করা যাবে । মোবাইলটির প্রাইমারি ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে ট্রিপল রেয়ার ক্যামেরা । 48 এমপি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা যা দিয়ে যে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে স্পষ্ট ভাবে ছবি তোলা যাবে । এর সাথে আরও 
দুইটি 8 এমপি এবং 2 এমপি ভালো মানের ক্যামেরা সংযুক্ত রয়েছে । প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে কোয়াড ফ্লাশ লাইটের সুবিধা দেওয়া হয়েছে । ফ্রন্ট ক্যামেরায় ডুয়েল ফ্লাশলাইটের সাথে রয়েছে 8 মেগাপিক্সেলের একটি সেলফি ক্যামেরা । ক্যামেরা গুলো দিয়ে এইচডিআর মুডে সুন্দর ছবি ক্যাপচার করা যাবে । এই মোবাইলটির সামনের ক্যামেরার সাথে রয়েছে ডুয়াল এলইডি ফ্লাশ লাইটের সুবিধা । ফ্রন্ট ক্যামেরা 8 মেগাপিক্সেল দিয়ে 3264 × 2448 পিক্সেলে ছবি তোলা যাবে । ভালো মানের ছবি ক্যাপচার এবং এডিট করার জন্য প্রাইমারি ক্যামেরাগুলোর ভমিকা অতুলনীয় ।


নেটওয়ার্ক কানেকশন 


মোবাইলটি দিয়ে 2G, 3G এবং 4G এর মতো ফাস্টেস্ট নেটওয়ার্ক কানেকশন উপভোগ করা যাবে । 2G নেটওয়ার্কে সর্বনিম্ন 850 এবং সর্বোচ্চ 1900 এমবিবিএস স্পিডে নেটওয়ার্ক উপভোগ করা যাবে । মোবাইলটিতে জিপিআরএস এর সুবিধা রয়েছে । দেশের নাম্বার ওয়ান নেটওয়ার্ক কানেকশন 4G চালালো যাবে ফুল স্পিডে । ন্যানো সিম এর পাশাপাশি ব্যবহার করা যাবে ডুয়েল সিম । ডুয়েল সিম ব্যবহার করেও আপনি কিন্তু উন্নত মানের নেটওয়ার্ক কানেকশন উপভোগ করতে পারবেন । দেশের নাম্বার ওয়ান নেটওয়ার্ক স্পিড 4 জি এই স্মার্টফোনে খুব সহজেই সাপোর্ট করবে । পৃথিবীর যে কোনো স্থানেই 4 জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে । 4 জি নেটওয়ার্কের কতগুলো ভার্সন এভেলেবেল রয়েছে 1,3,7,8,20,28 । তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে ব্যবহার করা যাবে না এনএফসি এবং ইনফারেন্ট পোর্ট ‌‌। অন্যান্য নেটওয়ার্কগুলো ভালোভাবেই চালানো যাবে । 


স্টোরেজ


স্মার্টফোনটির ইন্টার্নাল মেমোরিতে 128 জিবি রেম এবং 4 জিবি রোম রয়েছে । মোবাইলটির মেমোরি টাইপ মাইক্রোএসডিএক্সসি । এর পাশাপাশি পাওয়া যাবে ইউএসবি ক্যাবল এর সুবিধা । মোবাইলটিতে বেশি স্টোরেজ ব্যবহার করার কারণে মোবাইলটিতে প্রয়োজনীয় অনেক তথ্যাদি সংগ্রহ করে রাখা যাবে । মেমোরি পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো হওয়ার কারণেই এই মোবাইলটিতে হাই কোয়ালিটি এবং হাই লেভেলের সফটওয়্যার গুলো চালাতে কোন সমস্যা হবে না । একটি স্মার্টফোনের অন্যতম একটি অংশ হচ্ছে মেমোরি পারফরম্যান্স ‌‌। ক্রিয়েটিভ অথবা চালাক টাইপের লোকেরা সব সময় ভালো মানের স্মার্টফোন চয়েজ করে থাকে । তার কারণ হলো যে স্মার্টফোনগুলোতে বেশি মেমোরি ব্যবহার করা হয় সেগুলো ব্যবহার করে ততো বেশি আনন্দ পাওয়া যায় । আর সেই স্মার্টফোন গুলোর তালিকায় আমরা অবশ্যই ইনফিনিক্স এর নতুন এই মডেলটিকে দেখতে পাবো । 


সিকিউরিটি


 স্মার্টফোনটি রেয়ার মাউন্টেডে ব্যবহার করা হয়েছে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর । যা নির্ভুল এবং সঠিকভাবে শনাক্তকরণে সহায়তা করবে । এর সাথে রয়েছে আ্যাকসিলোমিটার,প্রক্সিমিটি এবং কম্পাস এর মতো উন্নত মানের সিকিউরিটি পদক্ষেপ । স্মার্টফোনগুলোতে একটু ইউনিক বা নতুনত্ব লুক দেওয়ার জন্য সিকিউরিটি সিস্টেমের চাহিদা ব্যাপক । কমবেশি আমরা প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই সিকিউরিটি সিস্টেমের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে থাকি । তার কারণ হলো নিজেদের স্মার্টফোনটিকে অন্যের কাছ থেকে সুরক্ষা রাখার জন্য সিকিউরিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে থাকে । এই স্মার্টফোনটির সিকিউরিটি সেন্সরটি অনেক দ্রুত কাজ করতে সক্ষম । জনপ্রিয় সব সিকিউরিটি পদক্ষেপ আমরা এখানে পেয়ে যাব । যেগুলোর কার্যকারী দক্ষতাও অনেক গুণ বেশি । সঠিকভাবে সনাক্ত করার জন্য এই ডিভাইসটির সিকিউরিটি পদক্ষেপ অনেকটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।


গেমিং এর জন্য কেমন ?


এই বাজেটের মধ্যে থাকা একটি স্মার্টফোন দিয়ে গেমিং পারফরম্যান্স কেমন পাওয়া যাবে সেটি হয়তো আপনাদের সকলের জানার কথা ‌‌। অপরদিকে স্মার্টফোনটির গেমিং গ্রাফিক্স এর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মালি G52 । হাই কোয়ালিটির গ্রাফিক্সের সাথে গেম প্লে করার জন্য এটি ততটা যোগ্য নয় । তার মানে দাঁড়ায় অনলাইন মুডের গেমগুলোকে মোটামুটি ভাবে খেলা গেলেও হাই কোয়ালিটির গ্রাফিক্স ডিজাইন পাওয়া যাবে না । আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অনলাইন গেমস পাবজি এবং ফ্রী ফায়ার এই মোবাইল দিয়ে খেলা যাবে কিনা ? হ্যাঁ খেলা যাবে তবে পাওয়া যাবেনা উন্নতমানের মুভমেন্ট এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন । তবে অফলাইন জগতের প্রায় প্রতিটি গেম এই ডিভাইসটি দিয়ে ভালোভাবে খেলা যেতে পারে । 


অনলাইন থেকে অর্ডার করার উপায়


যে কেউ চাইলে এই স্মার্টফোনটিকে অনলাইন থেকেও ক্রয় করতে পারবে । বর্তমান সময়ে প্রায় অনেকেই অনলাইন থেকে স্মার্ট ফোন অর্ডার করে থাকে । আবার অনেকে জানেই না অনলাইন থেকে কিভাবে স্মার্টফোন অর্ডার করা যায় । এই স্মার্টফোনটি অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে খুঁজে নিতে হবে ইনফিনিক্স কোম্পানির অফিশিয়াল ওয়েবপেইজ । সেখানে ইনফিনিক্স এর অন্যান্য মডেল গুলোর মতো এই মডেলটিকেও পেয়ে যাবেন । তবে অফিশিয়ল পেইজটি খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হলে অন্যান্য সাইট থেকে অর্ডার করার ক্ষেত্রে আপনার ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এজন্য এক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকতে হবে ‌‌। ইনফিনিক্স এর অফিশিয়াল পেজটি খুঁজে পাওয়ার পর এই মডেলটিকে অর্ডার করতে পারবেন । তবে অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য খরচ কিছুটা বাড়তে পারে ।



অফিসিয়াল প্রাইস


Infinix Note 10 T মডেলটিকে দেশের মার্কেটে সুলভমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে । মোবাইলটির অফিসিয়াল মূল্য 14,990 টাকা । মোবাইলটির মান অনুযায়ী দাম ততটা বেশি নয় । দেশের মার্কেটে এই মোবাইলটির অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল রূপ দুটোই রিলিজ করা হয়েছে । তবে আমার পক্ষ থেকে আপনাদের অফিশিয়াল মডেলটি চয়েজ করার ধারণা দেওয়া হলো । পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করেই স্মার্টফোনগুলোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেওয়া হয় । ঠিক যেমনটা আমরা এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রেই দেখতে পাবো । স্মার্টফোনটির মূল্য যেমনটা নির্ধারণ করা হয়েছে ঠিক তেমন পারফরম্যান্স ব্যবহার করা হয়েছে এই ডিভাইসটিতে । আমাদের মধ্যে অনেকেরই মনে হতে পারে যে এত দাম দিয়ে এই মোবাইলটি কেনা উচিত হবে কিনা ? আমার মতামতটি হলো আপনি যদি স্বল্পমূল্যের ভিতরে একটি ভালো মানের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে চান তাহলে এই মোবাইলটি আপনার জন্য হতে চলেছে মার্কেটের সেরা । 





1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন