রেডমি নোট 10 প্রো ম্যাক্স | The Best Smartphone in 2021 Redmi Note 10 Pro Max

বিগত কয়েক বছর ধরেই, শাওমি তার নোট সিরিজের মধ্য দিয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে । শাওমি নোট সিরিজটি এতটাই জনপ্রিয় যে মার্কেটে মডেলগুলোর আকর্ষণ অনেকাংশেই বেশি । যার উদাহরণ স্বরূপ Redmi Note 10 pro Max মডেলটিকে তুলে ধরা হলো । রেডমি লাভাররা একটি অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে যে কবে তাদের জনপ্রিয় এবং পছন্দের সিরিজ নোট নতুন করে মার্কেটে তাদের নতুন মডেল রিলিজ করবে । রেডমি কোম্পানির বহুল বিকৃত এবং আকর্ষণীয় একটি সিরিজ হচ্ছে নোট । সাধারণ মানুষের কাছে এই সিরিজটির চাহিদা ব্যাপক বলা যায় । রেডমি গ্রাহকদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মার্কেটে নতুন করে চলে আসলো Redmi Note 10 Pro Max । আলাদা একটি প্রিমিয়াম লুক নিয়ে মার্কেটের নতুন আকর্ষণ এই ডিভাইসটি । ফিচার এবং পারফরম্যান্স এর ঘাটতি রয়েছে কিনা ? নতুন কি আকর্ষণ রয়েছে ডিভাইসটিতে ? এক নজরে দেখে নেয়া যাক ।


The Best Smartphone in 2021 Redmi Note 10 Pro Max


কত পিক্সেল এর ক্যামেরা রয়েছে?


Redmi Note 10 Pro Max মডেলটিতে কোয়াড ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে । যার ওয়াইড ক্যামেরায় হাই লেভেলের 108 মেগাপিক্সেল রয়েছে, আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে 8 মেগাপিক্সেল, 5 মেগাপিক্সেল ব্যবহার করা হয়েছে ম্যাক্রো ক্যামেরায়, ডেপ্ট ক্যামেরায় রয়েছে 2 মেগাপিক্সেল । ডুয়েল পিক্সেল পিডিএফ এর সাথে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট । 16 মেগাপিক্সেল দেওয়া হয়েছে সামনের ক্যামেরায় । যেকোন ভিডিও আল্ট্রা এইচডি মুডে রেকডিং করা যাবে 2160 পিক্সেলে । স্মার্টফোনটির ক্যামেরা কালেকশন অন্যান্য মডেল গুলো থেকে অনেকটাই আলাদা । ক্যামেরা গুলোকে একটু উপরে সেট করার কারণে অবশ্যই ব্যাক কভার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হল । তার কারণ হলো ব্যাক কভার ব্যবহার না করলে ক্যামেরা গুলোতে দাগ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । ক্যামেরা পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো নাইট মোড , স্বল্প আলোতে অথবা রোদে ভালো মানের ছবি ক্যাপচার করা সম্ভব হবে ।


ডিসপ্লে কোয়ালিটি 


স্মার্টফোনটিতে 120 Hz এর সুপার আ্যামোলেড টাইপের এলইডি ব্যবহার করা হয়েছে । বড় সাইজের ডিসপ্লে রয়েছে 6.67 ইঞ্চি । মোবাইলটির ডিসপ্লে রেজুলেশন 1080×2400 পিক্সেল । ডিসপ্লের পিক্সেল ডেন্সিটি রয়েছে 395 পিপিআই । ডিসপ্লে প্রটেকশন হিসেবে কর্নিং গরিলা গ্লাস 5 ব্যবহার করা হয়েছে । এক্ষেত্রে আমি মনে করি ডিভাইসটি আমাদের হাত থেকে পড়ে গিয়ে অথবা পিছলে গিয়ে ভেঙে যাওয়ার ভয় কম ‌‌। এক কথায় বলতে গেলে ফোনটির ডিসপ্লে শক্তপোক্ত গ্লাসের মাধ্যমে সুরক্ষিত । নোট সিরিজের আলাদা মডেলগুলোর মত সুপার এমোলেড এর ফিচার খুবই নমনীয় । ডিভাইসটির ডিসপ্লেতে সুপার এমোলেড প্রবাইড করার কারণে টাচস্ক্রিন অনেকটা দ্রুত কাজ করবে । এখন পর্যন্ত ডিসপ্লেতে কোন নেগেটিভিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি । 120 হার্জ সাপোর্ট করার কারণে ডিসপ্লে টাচ স্ক্রিনে কোনো ইস্যু নেই । 

অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর


স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে এন্ড্রয়েড ভার্সন 11(MIUI12) । মোবাইলটির প্রসেসরে রয়েছে Octa Core আপ টু 2.3 GHz, Qualcomm Snapdragon 732G চিপসেট, Adreno 618 জিপিইউ ।  মোবাইলটিতে গেমিং প্রসেসর ব্যবহার করার কারনে গেমিং পারফরম্যান্স ভালো দিবে । এন্ড্রয়েড ভার্সন এর উদ্ভাবক গুগোল কিন্তু রীতিমতোই তাদের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করে যাচ্ছে । এখন আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এই ডিভাইসটিকে আপডেট করার মাধ্যমে তাদের নতুন ভার্সন গুলো পাওয়া যাবে । হ্যাঁ আরেকটি বিষয় যেটা তুলে না ধরলেই নয় , রেডমি মডেল এর নোট সিরিজগুলোতে মোটামুটি ভালো মানের সফটওয়্যার পাওয়া যায় ‌‌। এই মডেলটিতেও আমরা উন্নত এবং ভালো মানের সফটওয়্যার পারফরম্যান্স পেয়ে যাব । ব্যবহারকৃত প্রসেসর এবং চিপসেট প্রায় সবার পছন্দ হবার কথা ‌।

স্টোরেজ


মডেলটির মেমোরিতে 6/8 জিবি রেম এবং 64/128 জিবি রোম রয়েছে । ডেডিকেটেড মেমোরি স্লট ব্যবহার করা হয়েছে । আপনি চাইলে ওটিজি ক্যাবল দিয়ে আপনার ইচ্ছামতো রেম এবং রোম বাড়াতে পারবেন । বেশি স্টোরেজ ব্যবহার করার কারনে আপনি মোবাইলটিকে ফাস্টেস্ট স্পিডে চালাতে পারবেন । মেমোরি পারফরম্যান্সে ব্যবহার করা হয়েছে UFS 2.2 মডেল । বর্তমান সময়ের স্মার্টফোন গুলোর মধ্যে আমরা যে বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দিয়ে থাকি সেটি হচ্ছে মেমোরি অথবা স্টোরেজ । মেমরি ফিচারের উপর নির্ভর করেই ডিভাইসগুলো পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে । যে ডিভাইসগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে মেমোরি ব্যবহার করা হয়েছে সেই স্মার্টফোনগুলো অবশ্যই ভালো পারফরর্মেন্স দিতে সক্ষম । Redmi Note 10 pro Max এই মডেলটিতে মেমোরি পারফরম্যান্স খুবই ভালো ব্যবহার করা হয়েছে । তবে মেমোরি অথবা স্টোরেজে যে মডেল ব্যবহার করা হয়েছে সেটি আরেকটু উন্নত হলে ভালো হতো বলে মনে হয়েছে আমার কাছে । স্পিড নিয়ে কোন মন্তব্য নেই , দারুণ স্পীড পাওয়া যাবে । বাকি সবকিছুই ঠিকঠাক আছে বলে মনে হয়েছে ।

নেটওয়ার্কিং সিস্টেম


মোবাইলটি দিয়ে 3G নেটওয়ার্ক এর পাশাপাশি 4G এর মতো উন্নত মানের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে । তারবিহীন নেটওয়ার্কগুলোতে ফুল স্পিড পাওয়া যাবে । ন্যানো সিম এর পাশাপাশি ডুয়েল সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে । তারবিহীন নেটওয়ার্ক গুলোর মধ্যে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে dual-band , wifi-direct , ওয়াই ফাই হটস্পট , v5.1 মডেলের ব্লুটুথ , এফএম রেডিও , জিপিএস এবং এর পাশাপাশি থাকছে ইউএসবি ক্যাবল সি টাইপের v2.0 মডেল ও ওটিজি ক্যাবল । 2 জি নেটওয়ার্ক সংযোগ রেখে প্রতি সেকেন্ডে সর্বনিম্ন 850 এবং সর্বোচ্চ 1900 এমবিপিএস নেটওয়ার্ক স্পিড পাওয়া যাবে । 4 জি নেটওয়ার্কে প্রতি সেকেন্ডে পাওয়া যাবে সর্বনিম্ন 5.76 এমবিপিএস এবং সর্বোচ্চ নেটওয়ার্ক স্পিড পাওয়া যাবে 42.2 এমবিপিএস । 4 জি নেটওয়ার্ক স্পিডের কয়েকটি ভার্সন রয়েছে যেগুলো হলো 
1 , 3, 5 , 7 , 8 , 40 , 41 ।   


ব্যাটারি ব্যাকআপ


 স্মার্টফোনটিতে non-removable প্লেসমেন্টের ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে । ব্যাটারীতে পাওয়া যাবে লিথিয়াম পলিমার টাইম । এছাড়াও ব্যাটারি ক্যাপাসিটিতে রয়েছে 5,020 mAh পাওয়ার ‌‌। ফাস্ট চার্জিং সিস্টেম পাওয়া যাবে । ডিভাইসটির সাথে যে চার্জার বক্স পাওয়া যাবে সেটি দিয়ে 33 ওয়াট দ্রুত গতিতে চার্জ দেওয়া সম্ভব 
হবে । ব্যাটারিটি ফুল চার্জ হতে 75 মিনিট সময় লেগে যাবে । অনেক সময় আমরা দেখতে পাই ভালো ডিভাইসগুলোতেও চার্জিং স্বল্পতার কারণে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় । কিন্তু এই মডেলটিতে চার্জিং সমস্যার মতো কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না বলে আমি আশাবাদী ‌‌। তারবিহীন এবং রিভার্স চার্জিং সিস্টেমের কোন আভাস পাওয়া যায়নি । একটু গর্জিয়াস লুক পাওয়ার জন্য তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম গুলোর প্রয়োজন ছিল । এ বিষয়টি বাদে বাকি সবগুলো বিষয় সবার পছন্দ হওয়ার কথা । ‌‌

বডি ডিজাইন


বডির ডিজাইনে অন্যান্য মডেল গুলো থেকে প্রিমিয়াম লুক আনা হয়েছে এই ডিভাইসটিতে । স্মার্টফোনটি আকারে 164.5 মিলিমিটার দৈর্ঘ্য , 76.2 মিলিমিটার প্রস্থ এবং 8.1 মিলিমিটার চওড়া । ডার্ক নাইট , ব্লু এবং ভিন্টেজ ব্রঞ্চ কালার সহ বিভিন্ন কালারে মার্কেটপ্লেসে মোবাইলটিকে পাওয়া যাবে । স্মার্টফোনটি ওজনে অনেকটাই হালকা ‌‌। মাত্র 192 গ্রাম হওয়ার কারণে মোবাইলটিকে যেখানে খুশি সেখানে বহন করা যাবে  । বিল্ড ম্যাটেরিয়ালে থাকছে ফ্রন্ট গ্লাস এবং গ্লাস ব্যাক । তবে একটি খুশির খবর হচ্ছে আইপি 53 ওয়াটার এবং ধুলোবালি প্রুফ । এখানে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখবেন ডিভাইসটি সম্পূর্ণ ওয়াটারপ্রুফ নয় সামান্য ধুলোবালি এবং পানি ছিটেফোঁটা থেকে রক্ষা করবে । অনেকে আসে ওয়াটারপ্রুফ এর কথা শুনলেই মোবাইলকে আগে পানিতে ডুবিয়ে রাখে । এই ফোনটির ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা করা যাবে না ।

গেমিং পারফরম্যান্স কেমন করবে ?


রেডমি কোম্পানির প্রায় প্রতিটা ডিভাইসে আলাদাভাবে গেমিং প্রসেসর দেওয়ার কারনে গেমিং পারফরম্যান্স ভালো হয়ে থাকে । এই মোবাইলটিতে তার ব্যতিক্রমী কিছু নেই । অনলাইন গেম গুলো খেলার জন্য পাওয়া যাবে দারুন ফিচার । আমরা যারা গেম খেলার জন্য এই মডেলটিকে বেছে নিয়েছি তাদের এটা জানা উচিত যে গেম খেলার জন্য এই মোবাইলটি খুবই ভালো ব্যাক আপ দিয়ে থাকবে । আমার তরফ থেকে ব্যক্তিগতভাবেও সাজেস্ট করা হলো গেমিং পারফরমেন্সের জন্য এই মোবাইলটিকে । ব্যাটারি পারফরম্যান্স ভালো হওয়ার কারণে দীর্ঘক্ষন গেম খেলা পসিবল । মেমোরি পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালই যার ফলে গেম খেলার সময় কোন ল্যাক অথবা হ্যাং করার সম্ভাবনা নেই । গেমিং গ্রাফিক্সে থাকছে ভালো মানের জিপিইউ মডেল । অনলাইন প্রথমসারির অর্থাৎ ফ্রী ফায়ার এবং পাবজি অথবা ক্লাস অফ ক্লান ইত্যাদি অনলাইন গেমগুলোকে হাই কোয়ালিটি গ্রাফিক্স পাওয়া যাবে ।


ডিভাইসটিকে কি অনলাইনে পাওয়া যাবে ?


বর্তমান জেনারেশনে এসে মানুষ ঘরে বসে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত । অনলাইন থেকে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে অর্ডার করা যায় বলে অনলাইন ইকমার্স সাইট গুলো আজ অনেকটাই খ্যাত । এই মোবাইলটিকে অনলাইন থেকে ক্রয় করা অথবা অর্ডার করা যাবে ‌‌। Redmi.com এর অফিশিয়াল পেইজ থেকে মোবাইলটি অর্ডার করা 
যাবে । এছাড়াও আরো অন্যান্য সাইট রয়েছে যেমন আলিবাবা এক্সপ্রেস এবং অ্যামাজন । তবে অনলাইন থেকে অর্ডার করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বাড়তি খরচ পরিশোধ করতে হবে ।

বাজার মূল্যের সাথে পারফরম্যান্স ঠিক রয়েছে কিনা ?


নির্ধারিত বাজার মূল্যের সাথে মোবাইলটিতে দেওয়া পারফরম্যান্স আমার কাছে ঠিকঠাক মনে হয়েছে । মেমোরি পারফরমেন্সের উপর লক্ষ্য করলে দেখতে পাওয়া যায় 2 টি ভেরিয়েন্ট এর ফিচার রয়েছে । মেমোরি ফিচার অনুযায়ী বাজারমূল্য ততটা বেশি নয় । 6 জিবি রেম ভেরিয়েন্টের যে স্মার্টফোনটি বাজারে রিলিজ হয়েছে সেটির প্রাইস ৳25,000 এর কাছাকাছি হলে ভালো হতো ‌‌। দেখা গেছে তাহলে যারা সাধারণ জনগণ তাদের জন্য এই মোবাইলটি হাতের মুঠোয় নিতছ ততটা কষ্ট হতো না । এই বিষয়টি ছাড়া বাকি সবগুলো বিষয় ঠিক রয়েছে ‌

প্রাইস


Redmi Note 10 Pro Max অফিশিয়াল এই মডেলটিকে সুলভ মূল্যে মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে । স্মার্টফোনটির অফিশিয়াল মূল্য 6/128 জিবি ৳28,999 টাকা এবং 8/128 জিবি ৳30,999 টাকা । যারা গেমিং পারফরমেন্সের জন্য মোবাইল খুঁজছেন এই ফোনটি হতে পারে তাদের জন্য সেরা । কিছু টাকার বিনিময় একটি ভাল মানের প্রযুক্তি হাতে নেওয়ার সুযোগ এটাই । আনঅফিসিয়াল মোবাইল প্রাইস আলাদা আলাদা দোকানে ভিন্ন রকম হতে পারে ।











 


1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন