5 টি রেয়ার ক্যামেরার সাথে আকর্ষনীয় ডিজাইনে | Walton Primo ZX4

ওয়ালটন কোম্পানিটি সচরাচর আমাদের মাঝে এন্ট্রি লেভেলের প্রাইস থেকে শুরু করে মিড রেঞ্জের ভিতরে থাকা স্মার্টফোনগুলোকে রিলিজ করে থাকে । এন্ট্রি লেভেল প্রাইস এর সংখ্যা ছিল বেশিরভাগ । অবশেষে ওয়ালটন কোম্পানি মিডিয়াম রেঞ্জের ভিতরে থাকা আরও একটি স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করলো । মডেলটির নাম Walton Primo ZX4 । ওয়ালটনের নতুন এই মোবাইলটিকে এপ্রিল, 2021 দেশের মার্কেটে রিলিজ করা হয় । মডেলটি মার্কেটে আসার পর থেকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষনে সাফল্য অর্জন করেছে । এই মডেলটির সাথে আপনি পাচ্ছেন 4% অর্থাৎ 1000 টাকা ডিসকাউন্ট । এই স্মার্টফোনটি রিলিজের মাধ্যমে ওয়ালটনের আরও একটি নতুন রেকর্ড তৈরি হলো । বাংলাদেশে তৈরি করা এটিই একমাত্র স্মার্ট ফোন যেখানে পাওয়া যাবে পাঁচটি ক্যামেরা । পাঁচটি ক্যামেরা নিয়ে মার্কেটে আসার পর থেকেই গ্রাহকরা সমালোচনার ঝড় তৈরি করে দিয়েছে ।



5 টি রেয়ার ক্যামেরার সাথে আকর্ষনীয় ডিজাইনে Walton Primo ZX4



ক্যামেরা পারফরম্যান্স 


এই ডিভাইসটির ক্যামেরা পারফরমেন্সে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং মনোমুগ্ধকর পিক্সেলের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে । প্রাইমারি ক্যামেরায় রয়েছে 64 মেগাপিক্সেল, আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরায় 8 মেগাপিক্সেল, ছবি স্পষ্টভাবে দেখার জন্য ম্যাক্রো ক্যামেরায় থাকছে 5 মেগাপিক্সেল, ডেপ্ট এবং টেলিফটো ক্যামেরায় 2 মেগাপিক্সেল করে মোট 5 টি ক্যামেরা রয়েছে । যা দিয়ে জোম ব্যবহার করে ন্যাচারাল সিনারি এবং ইমেজ ক্যপচার করা যাবে । ফ্রন্ট ক্যামেরায় 32 মেগাপিক্সেল এর একটি সিঙ্গেল ক্যামেরা রয়েছে । সামনের ক্যামেরায় 32 মেগাপিক্সেল ব্যবহার করায় এর সুবিধাস্বরূপ ডিএসএলআর এর মোডে সেলফি ক্লিক করা যাবে । আলোর সুবিধার জন্য 5 টি ক্যামেরার সাথে যুক্ত করা হয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট । এইচডি মুডে 1080 পিক্সেলে যেকোন ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে । ক্যামেরা 5 টি একসাথে ব্যবহার করা হয়নি । এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট এর সাথেও একটি ক্যামেরা সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে । প্রাইমারি ক্যামেরাগুলোর ফিচারে আমরা পেয়ে যাবো অটো ফোকাস , ডিজিটাল জুম , অটো ফ্লাশ , হোয়াইট ব্যালেন্স প্রিসেট , নরমাল মোড , ফিল্টার , হাই ডায়নামিক রেঞ্জ এবং টাচ টু ফোকাস সহ আরো বিভিন্ন রকমের মুডের সাথে ছবি তোলা যাবে । প্রাইমারি ক্যামেরাগুলো দিয়ে 9000×7000 পিক্সেল এর ছবি ধারণ করা যাবে ।

স্টোরেজ মেমোরি


মডেলটির মেমোরি কার্ড স্লটে মাইক্রোএসডিএক্সসি টাইপ মেমোরি রয়েছে । যার কারণে আলাদাভাবে মেমোরি স্টোরেজ বাড়িয়ে ব্যবহার করা যাবে । এছাড়াও অভ্যন্তরীণ ইন্টারনাল স্টোরেজে পাওয়া যাবে 8 জিবি রেম এবং 128 জিবি রোম । UFS 2.1 ভার্সনের মেমোরি কার্ড স্লট পাওয়া যাবে । এই স্মার্টফোনটি এক্ষেত্রে আপনার সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ওটিজি ক্যাবল সাপোর্টার । ওটিজি ক্যাবল ব্যবহার করে আপনি চাইলেই মেমরি স্টোরেজ বাড়িয়ে নিতে পারবেন । 8 জিবি রেমের কথা শুনে অনেকেই হয়তো বুঝে নিয়েছেন এই স্মার্টফোনটিকে দুর্দান্ত স্পিডে ব্যবহার করা যাবে । মেমোরি পারফরমেন্সের জন্য ওয়ালটন কোম্পানির একটি অন্যতম মডেল এই ডিভাইসটি । প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ তথ্য এখানে সংগ্রহ করে রাখা যাবে । মুভি , নাটক , ছবি ইত্যাদি স্মার্টফোনটির ফাইল আকারে সংগ্রহ করার সুবিধা রয়েছে । 


ব্যাটারি টাইপ এবং সিকিউরিটি


মোবাইলটিতে নন রিমুভাল lithium-polymer টাইপ ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়েছে । ব্যাটারি ক্যাপাসিটিতে রয়েছে 4000mAh মিডিয়াম কোয়ালিটির পাওয়ারের ব্যাটারি । দ্রুত চার্জিং সিস্টেম রাখা হলেও তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম  রাখা হয়নি । স্মার্টফোনের ব্যাটারি 18 ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টেড । মিডিয়াম শক্তিশালী ব্যাটারির ব্যবহার দেখা যাবে । ডিভাইসটির ফুল চার্জ হতে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা লেগে যাবে । ফুল চার্জ হয়ে যাওয়ার পর অনলাইন ব্যবহারে দীর্ঘক্ষন চালানো যাবে হ্যান্ডসেটটিকে । ব্যবহারকারীর সুবিধার কথা মাথায় রেখে রেয়ার মাউন্টেডে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট  সেন্সর  রাখা হয়েছে । রেয়ার মাউন্টেডেে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি সেট করার ফলে ব্যবহারকারী খুব সহজেই তার ফোনটি আনলক করতে পারবে । এর সাথে ব্যবহার করা হয়েছে ফেস আনলকিং সিস্টেম । যা নিখুঁতভাবে শনাক্তকরণে  সফল ।  ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটির অবস্থান ঠিক জায়গায় রয়েছে , ব্যবহার করার সময় খুব সহজেই আঙ্গুল দিয়ে ব্যবহার করা যাবে । সিকিউরিটি সিস্টেমে আরো পাওয়া যাবে ইলেকট্রনিক্স সেন্সর এবং লাইট সেন্সর এর 
সুবিধা ।



বডি ডিজাইন


ওয়ালটন  ব্রান্ডের আকর্ষণীয় বডি ডিজাইনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি মডেল হল Walton Primo ZX4 । প্রিমো সিরিজগুলোর বডি ডিজাইনের ফিনিশিং অবশ্য ভালো হয়ে থাকে । ওয়ালটনের নতুন মডেলটির বডির নজরকাড়া ডিজাইন গ্রাহকদের মুখে ছড়াছড়ি । বডির সামনে এবং পিছনে গ্লাসের আবরণ দিয়ে ফিনিসিং দেওয়া হয়েছে । অন্যদিকে মোবাইলটির সম্পূর্ন বডিকে প্লাস্টিকের ফ্রেমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে । কোম্পানির দেওয়া তথ্যসূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি গরিলা গ্লাস এর ব্যবহার । অনেকটা সাবধানতার সাথেই ব্যবহার করতে হবে হ্যান্ডসেটটিকে । গ্রাহকদের সুবিধার জন্য স্মার্টফোনটির ডান পাশে রাখা হয়েছে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ভলিউম বাটন । বডির ঠিক বাম পাশে পাওয়া যাবে মেমরি এবং সিম কার্ড স্লট । অডিও ফিচারের জন্য রয়েছে 3.5 এমএম হেডফোন জ্যাক এবং এর সাথে রাখা হয়েছে সিঙ্গেল স্পিকারের ।

গেমিং পারফরম্যান্স কেমন পাওয়া যাবে? 


মার্কেটে রিলিজ হওয়া প্রায় প্রতিটা স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি কমন প্রশ্ন হচ্ছে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে কি ভালো মানের গেম প্লে করা যাবে ? এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রেও কিন্তু সেই একই রকম প্রশ্ন থেকে যায় গ্রাহকদের কাছে । স্মার্টফোনটিকে মিড রেঞ্জের প্রাইসের মধ্যে রাখা হয়েছে অনেকের ধারণা এখানে পাওয়া যাবে মিডিয়াম লেভেলের পারফরম্যান্স । যেহেতু মিডিয়াম লেভেলের পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে সেহেতো এই ডিভাইসটি গেম খেলার জন্য যোগ্য এটা অনেকেই মনে করে থাকে । আমার মতামতটিও কিন্তু তাদের সাথে ভিন্ন নয় । মিডিয়াম পারফরমেন্সের সাথে সাথে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে পাওয়া যাবে হাই মুভমেন্ট এবং গ্রাফিক্স কোয়ালিটি বিশেষ করে অনলাইন গেম গুলোর জন্য । ফাস্টেস্ট স্পিড এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য অনলাইন গেম গুলো খেলার জন্য এই ডিভাইসটি অনেকের কাছে সেরা বলে মনে হতে পারে মার্কেট গুলোর মধ্যে ।

এলসিডি টাইপ অথবা ডিসপ্লে


স্মার্টফোনটির এলসিডি প্যানেলটিতে ফুল এইচডি প্লাস রেজুলেশন ব্যবহার করা হয়েছে । 1080 × 2400 এইচডি পিক্সেলে যেকোন ভিডিও অথবা প্লেব্যাক এইচডি রেজুলেশনে দেখা যেতে পারে ‌‌। আইপিএস এলসিডি ক্যাপাচিতিভ টাইপের প্যানেল রয়েছে । 6.67 সাইজ এর ডিসপ্লেটিতে কালার সাপোর্ট করবে 16 
মিলি । 83.5% স্ক্রীন টু বডির রেটিও রেট এর পাশাপাশি ডিসপ্লের ঘনত্ব রয়েছে 395 পিপিআই ডেনসিটি । ডিসপ্লের ঘনত্বের মাত্রা ভালো বলা যেতে পারে । এলসিডি প্যানেলটির অন্যতম একটি হলো ব্রাইটনেস । ইনডোরে খুবই ভালো ব্রাইটনেস পাওয়া গেলেও আউটডোরে ব্রাইটনেস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা ঝামেলা হতে পারে । ডিসপ্লেতে থাকছে না নোটিফিকেশন এলইডি । ডিসপ্লে সুরক্ষার জন্য পাওয়া যাবে না কোন প্রটেকশন গ্লাস । পাঞ্চ হোল টাইপের ডিসপ্লের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যাবে । 



অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর


একটি স্মার্টফোনের প্রাণকেন্দ্র বলা হয়ে থাকে অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসরকে । স্মার্টফোন অথবা ডিভাইসগুলোতে আপনি কোন ধরনের সফটওয়্যার এবং কিসের মাধ্যমে সফটওয়্যারগুলোকে ইন্সটল করতে পারবেন সে বিষয়ে ধারনা পাওয়া যাবে অপারেটিং প্লাটফর্মে । Walton Primo ZX4 মডেলটিকে পরিচালিত করা হয়েছে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন 11 এর মাধ্যমে । অ্যাপ ইন্সটল করে আপডেট করার জন্য গুগোলকে ফলো করতে হবে । অপরদিকে চিপসেটের দিকে নজর ফেললে দেখা মিলবে মিডিয়াটেক হেলিও G95 । ডিভাইসটির প্রসেসরে পাওয়া যাবে আলোচিত অক্টাকোর মডেল । ওয়ালটনের নতুন ডিভাইসটি জিপিইউতে কিছুটা ভিন্নতা এনেছে । গেমিং গ্রাফিক্স এর জন্য জিপিইউতে রাখা হয়েছে আর্ম মালি G76 । এই স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেমে অনেক নতুনত্বের আভাস পাওয়া গেছে । অপারেটিং সিস্টেমের প্রতিটা অংশে আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয়তার স্পর্শ খুঁজে পাওয়া যায় ।



স্মার্টফোনটি অনলাইনে অর্ডার করার সুযোগ পাওয়া যাবে কিনা ?


অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়টি এখন আমাদের কাছে জনপ্রিয়তার আভিজাত্য বলে মনে হয় থাকে । এমন কাউকে খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে যে কিনা ডিজিটাল সময়ে অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে না জানে । প্রফেশনাল মানের লোকদের পাশাপাশি সাধারন মানুষও অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পছন্দ করে থাকে । যাই হোক এখন প্রশ্ন হচ্ছে ওয়ালটনের নতুন এই ডিভাইসটি অনলাইন থেকে অর্ডার করা যাবে কিনা ? আমরা যারা ওয়ালটন প্রেমি রয়েছি তাদের হয়তো এই বিষয়টি জানার কথা যে ওয়ালটন আমাদের দেশীয় পণ্য । দেশের মার্কেটে এই মডেলটিকে খুব সহজে পাওয়া 
যাবে । এখন আলাদাভাবে যদি কেউ অনলাইন থেকেও এই স্মার্টফোনটি অর্ডার করতে চায় ইন্টারনেট , স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপের মাধ্যমে সে কিন্তু খুব সহজেই অর্ডার করে নিতে পারবে । অর্ডার করার সময় অবশ্যই নিজেকে সচেতন থাকতে হবে । অনলাইন থেকে পণ্য ক্রয় করে অনেকেই ধোকা খেয়েছে এমন বিষয় হেডলাইনে আমরা প্রতিনিয়তই দেখতে পাই । এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে ওয়ালটনের নতুন হ্যান্ডসেটটিকে বিশ্বাস নির্ভর ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করা যাবে । অনলাইন থেকে অর্ডার করার জন্য অবশ্যই আপনাকে বাড়তি কিছু খরচ করতে হতে পারে ।




বাংলাদেশে ফোনটির মূল্য কত?


মডেলটি বাংলাদেশী পণ্য হওয়ায় মোবাইলটিকে হাতের কাছেই পাওয়া যাবে । 8/128 জিবি স্টোরেজের অফিশিয়াল মডেলটি পাওয়া যাবে ৳26,990 টাকায় ।Walton primo ZX4 মডেলটি মানে ভালো এবং দামে সাশ্রয়ী । ওয়ালটনের অন্যান্য স্মার্টফোনগুলো আমরা 15 থেকে 20 হাজারের মধ্যেই পেয়ে যাই । এখন অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জাগার কথা সেটি হচ্ছে এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রে 26,990 টাকা কেন ? অন্যান্য মডেল গুলো থেকে এই স্মার্টফোনটি কেন একটু বেশি টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হবে । এর কারণটা আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি না । জিনিস যেটা ভালো দাম তার একটু বেশি এই প্রবাদটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত । ওয়ালটনের রিলিজ করা অন্যান্য মডেল গুলো থেকে এই স্মার্টফোনটির পারফরম্যান্সে অনেক ভিন্নতা দেখা যায় । অন্যান্য মডেল গুলো থেকে এই ডিভাইসটিতে সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলকভাবে অনেকটা বেশি পাওয়া যাবে । আর এসব বিবেচনায় এই স্মার্টফোনটির জন্য কোম্পানি একটু বেশি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ।

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন