ইনফিনিক্স হট 11এস স্পেসিফিকেশন | Infinix hot 11S Bangla review

মিড রেঞ্জের ভিতরে একটি ভালো মানের এবং মানসম্মত স্মার্টফোন ব্যবহার করার আগ্রহ আমরা সকলের মধ্যেই দেখতে পাই । একটি আকর্ষণীয় মানের ডিসপ্লে , চোখ ধাঁধানো বডি কোয়ালিটি , ভালো মানের অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ এবং অন্যান্য দিকগুলো আমরা যদি স্বল্পমূল্যের ভিতরে পেয়ে যা তাহলে বিষয়টি কেমন হয় । আমরা সকলেই স্মার্টফোন কেনার পূর্বে এই বিষয়গুলো যাচাই করে তারপরে স্মার্টফোনগুলো ক্রয় করে থাকি । মিডিয়াম সিগমেন্টের আরও একটি স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করলো ইনফিনিক্স । মডেলটির নাম Infinix Hot 11S । একটু কম বাজেটের মধ্যে মার্কেটে রিলিজ করেছে ইনফিনিক্স কম্পানি আরো একটি ভালো মানের স্মার্টফোন । আমরা সকলেই জানি ইনফিনিক্স  কোম্পানিটি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে একটু স্বল্পমূল্যের ভিতরে ভালো মানের স্মার্টফোন রিলিজ করে থাকে । যার অন্যতম একটি উদাহরণ হলো এই ডিভাইসটি । স্মার্ট ফোনটি ব্যবহার করে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে এবং কি কি অসুবিধা থাকছে এই স্মার্টফোনটিতে তার পাশাপাশি ফুল স্পেসিফিকেশন জেনে নেওয়া যাক ।



ইনফিনিক্স হট 11এস স্পেসিফিকেশন | Infinix hot 11S Bangla review



বডি হাইলাইটস


ইনফিনিক্স এর রিলিজ করা ডিভাইসগুলো বিশেষ করে হট সিরিজের স্মার্টফোনগুলো আকারে কিছুটা বড় । এই ডিভাইসটির ক্ষেত্রও এর ভিন্নতা দেখা যায়নি । স্মার্টফোনটির পিছনের দিকে একটি ঢেউ আকৃতি ডিজাইন দেওয়া হয়েছে । তবে এই স্মার্টফোনটিকে একটি প্রিমিয়াম লুক দেওয়ার জন্য এর থেকে ভিন্ন কিছু দিলে হয়তো ভালো হতো । যাইহোক এই ডিজাইনটিকে  আপনাদের ভালো লাগবে বলে আশা করা যায় । ওজনের ক্ষেত্রেও এই স্মার্টফোনটি কিছুটা ভারী হলেও ব্যবহার করার সময় কিন্তু তা অনুভব করা যাবে না । স্মার্টফোনটিকে কালো কালারসহ আরো ভিন্ন কয়েকটি কালারে পেয়ে যাবেন । ডিভাইসটির ফ্রন্টে গ্লাস ব্যবহার করা হলেও সম্পূর্ণ বডি প্লাষ্টিক এর আবরণ দ্বারা 
আবদ্ধ । স্মার্টফোনটি আকারে কিছুটা বড় হলেও আপনি কিন্তু এটিকে যেখানে খুশি সেখানে বহন করতে পারবেন সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না । বডির রাইট সাইডে ভলিউম বাটনের পাশাপাশি থাকছে গুগোল অ্যাসিস্ট্যান্ট বাটন । 


ক্যামেরা সেটআপ


স্মার্টফোনটির প্রাইমারি ক্যামেরায় থাকছে চমৎকার পারফরম্যান্স । লো লাইট পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ডেলাইট মুডে খুবই ভালো মানের ফিচার পাওয়া যাবে । স্মার্টফোনটির প্রাইমারি ক্যামেরার দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাব এখানে রয়েছে ট্রিপল আইটেমের ক্যামেরা সেটআপ । ওয়াইড সেন্সরে আমরা পেয়ে যাব 50 মেগাপিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্যামেরা সেন্সর । আল্ট্রা ওয়াইড ফাংশনের রয়েছে 2 মেগাপিক্সেল এবং ম্যাক্রো সেন্সরে থাকছে 2 মেগাপিক্সেল । স্মার্টফোনের ক্যামেরা পারফরম্যান্স দেখে আমরা জানতে পারি যে স্বল্প আলোতেও এই স্মার্টফোনটির ক্যামেরা পারফরম্যান্স অনেকটা ভালো দিবে । এবার কথা বলা যাক স্মার্টফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরা নিয়ে । ডিভাইসটির ফ্রন্ট ক্যামেরা আমরা দেখতে পাব 8 মেগাপিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্যামেরা । এছাড়াও আরও একটি খুশির খবর হলো এই স্মার্টফোনটি ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং প্রাইমারি ক্যামেরার মাধ্যমে আপনি ফুল এইচডি মুডে যেকোনো ছবি অথবা ভিডিও ক্যামেরা বন্দী করতে পারবেন ।


ডিসপ্লে ডেকোরেশন


ডিভাইসটির ডিসপ্লে নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে একটি বিষয় জেনে রাখা যাক এই স্মার্টফোনটিতে আমরা পেয়ে যাবো পাঞ্চ হোল টাইপের এলসিডি প্যানেল । ডিসপ্লেটিতে থাকছে 90 হার্জের রিফ্রেশ রেট । এছাড়াও এই স্মার্টফোনটিতে আপনারা পাবেন ফুল এইচডি রেজুলেশন এর পাশাপাশি 405 পিপিআই ডেনসিটি । ডিসপ্লে ডেকারেশন এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় বিশেষ করে এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রে । যারা একটু বড় মাপের ডিসপ্লে পছন্দ করে থাকে তাদের জন্য এই স্মার্টফোনটি বিশেষ করে অনেকটাই কার্যকরী পদক্ষেপ ফেলতে পারে তার কারণ হলো এই স্মার্টফোনটির ডিসপ্লে সাইজ 6.78 ইঞ্চি । এখন আপনি যদি স্মার্টফোনের মাধ্যমে প্লেব্যাক অথবা ভিডিও দেখতে পছন্দ করে থাকেন তাহলে এই ডিসপ্লেটি আপনার জন্য ভালো মনে হতে পারে । কেবল মাত্র এখানেই শেষ নয় স্মার্ট ফোনটিতে আমরা পাবো 500 নিটস ব্রাইটনেস যার মাধ্যমে কিন্তু আমরা স্বল্প আলোর পাশাপাশি আউটডোরে কিছুটা ভালো ব্রাইটনেস খুজে পাব । ডিভাইসটির‌ এলসিডি প্যানেলটিতে থাকছে না নোটিফিকেশন এলইডি ।


অভ্যন্তরীণ মেমোরি অথবা স্টোরেজ


ডিভাইসটির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ মেমোরি অথবা স্টোরেজ পারফরম্যান্স । ইনফিনিক্স মডেলের হট সিরিজগুলোর অন্যান্য ডিভাইসগুলো থেকে অভ্যন্তরীণ স্টোরেজের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই এই ডিভাইসটি । মডেলটিতে আমরা পেয়ে যাবো দুইটি ভিন্ন টাইপের আভ্যন্তরীণ স্টোরেজ । এই স্মার্টফোনটির অভ্যন্তরীণ স্টোরেজে থাকছে 4 জিবি ও 6 জিবি রেম ‌। অপরদিকে তো থাকছেই 64 এবং 128 জিবি রোম । আরো একটি অন্যতম মূল্যবান বিষয় হচ্ছে আপনারা আপনাদের প্রয়োজনে ওটিজি ক্যাবল ব্যবহার করে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্টোরেজ বাড়িয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন । দুইটি ভিন্ন টাইপের অভ্যন্তরীণ স্টোরেজের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে যাব এই মডেলটিতে । যেকোনো ধরনের অ্যাপস অথবা সফটওয়্যারগুলো দ্রুতগতিতে উপভোগ করা যাবে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে । এই ডিভাইসটির মেমোরি পারফরম্যান্স আমাদের মধ্যে প্রায় সকলের কাছেই ভালো লাগবে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে । 


ব্যাটারি পাওয়ার


স্মার্টফোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ হাইলাইটসের শুরুতেই বলতে হয় এখানে ব্যবহার করা হয়েছে 5000 mAh মোটামুটি ভালো মানের অথবা শক্তিশালী ব্যাটারি পাওয়ার । ব্যাটারি পারফরমেন্সে থাকছে non-removable লিথিয়াম পলিমার টাইপের সেটআপ । চার্জিং সিস্টেমের জন্য স্মার্টফোনের সাথে থাকছে চার্জার বক্স । মোবাইলটির সাথে পাওয়া চার্জারটি দিয়ে 18 ওয়াট দ্রুতগতিতে হ্যান্ডসেটটিকে চার্জ দেওয়া যাবে । তারবিহীন অথবা ওয়ারলেস চার্জিং সিস্টেম এর সন্ধান এখানে পাওয়া যাবে না । মোবাইল ফোনের ভিতরে থাকা ব্যাটারি কিছুটা বড় । চার্জিং স্পিড দ্রুত হওয়ার কারণে এই স্মার্টফোনটিকে ফুল চার্জ করার জন্য প্রয়োজন হবে মাত্র 1 ঘণ্টা 15 মিনিটের । তার মানে বোঝা গেল আমরা খুব অল্পসময়ের মধ্যেই এই স্মার্টফোনটিকে ফুল চার্জ করে নিতে পারবো । এই স্মার্টফোনগুলোর ভালো দিকগুলোর মধ্যে ব্যাটারি পারফরম্যান্স একটি অন্যতম বিষয় ।


অনলাইন গেমিং পারফরম্যান্স


অনলাইন ভিত্তিক মার্কেটপ্লেসগুলোতে আমরা বিভিন্ন ধরনের গেম দেখে থাকি আবার গেমপ্লে করেও থাকি । উদাহরণস্বরূপ আমরা ফ্রী ফায়ার এবং পাবজির কথাই বলি । অনলাইন ভিত্তিক এই গেমগুলোকে খেলার জন্য আমাদের একটি মানসম্মত এবং ভালো মানের স্মার্টফোনের প্রয়োজন হয়ে থাকে , যদি আমরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে গেম প্লে করতে চাই । অনলাইন গেম গুলো খেলার সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন লক্ষ্য করে থাকি । এই গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো কিন্তু আমরা একটি ভালো মানের স্মার্ট ফোন ছাড়া অন্যান্য স্মার্টফোনে দেখতে পাবো না । এখন আমরা যদি এই গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলোর সাথে গেম প্লে করতে চাই তাহলে কিন্তু আমাদের অবশ্যই একটি দামি স্মার্টফোন এর প্রয়োজন হবে । ইনফিনিক্স এর নতুন মডেলটি মার্কেটে রিলিজ হওয়ার ফলে অনেকের ভেতর থেকেই ভয় দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ । তার কারণ হলো ইনফিনিক্স এর নতুন মডেলটির মাধ্যমে আপনি গেমপ্লে গুলোতে পেয়ে যাবেন দারুন গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং এখানে রয়েছে ভালো মানের অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ যার কারণে আপনাকে গেমপ্লে করার সময় কোন সমস্যায় পড়তে হবে না আশা করা যায় ।


সিকিউরিটি সিস্টেম 


স্মার্টফোন ব্যবহারকারী আমরা সকলেই সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করে থাকি স্মার্টফোনের সুরক্ষার জন্য । দিনশেষে স্মার্টফোন গুলো যেভাবে আপডেট করা হচ্ছে তার সাথে সাথে স্মার্টফোনগুলোতে অনেকটা উন্নত মানের সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করা হয়ে থাকে । বর্তমান সময়ে আপডেট করা স্মার্টফোন গুলোতে খুবই ভালো মানের সিকিউরিটি সিস্টেম আমাদের নজরে চলে আসে । এই স্মার্টফোনটির ক্ষেত্রে সিকিউরিটি সিস্টেমের আমরা পেয়ে যাব মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম । কেবলমাত্র মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নয় এর পাশাপাশি আরও অনেক ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে এই মোবাইলটিতে যেমন গায়রো স্কোপ , এক্সেলেরোমিটার , প্রক্সিমিটি ইত্যাদি ইত্যাদি । মোবাইলের ডিসপ্লের ঠিক পিছনের দিকে মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি সেট করা হয়েছে তবে কারো কারো কাছে এই সেন্সরটি কিছুটা উপরে বলে মনে হতে পারে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর একটি ভালো দিক হলো এটি দিয়ে খুব দ্রুতগতিতে সনাক্ত করা যাবে ।


স্মার্টফোনটি ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা


ইনফিনিক্স ব্র্যান্ডের নতুন এই মডেলটি ফুল স্পেসিফিকেশন জানার পর আমরা অনেকেই জেনে গেছি যে এই স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে কি ধরনের সুবিধা ভোগ করা যাবে এবং কোন ধরনের অসুবিধার মুখোমুখি হতে হবে । স্মার্টফোনটি আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারি এই স্মার্টফোনটি বডি ডেকোরেশন থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ফাংশনে নিত্যনতুন এর ছোঁয়া লেগে আছে । অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ অথবা রেম এবং রোম ভালো মানের থাকার কারণে স্মার্টফোনটিকে ব্যবহার করা যাবে দ্রুতগতিতে । ডিভাইসটির অপারেটিং সিস্টেম গুগোল এর লেটেস্ট ভার্সন দ্বারা পরিচালিত । এর মানে খুব সহজেই বলা যায় স্মার্টফোনটিতে অ্যাপস এবং সফটওয়্যার গুলো আপডেট এবং ব্যবহার করার জন্য গুগল প্লে স্টোর ব্যবহার করা যাবে । যাহোক স্মার্টফোনটির বিভিন্ন ধরনের সুবিধা আমরা দেখতে পেলাম এখন আমরা আলোচনা করবো স্মার্টফোনটির অসুবিধা সম্পর্কে । এই মডেলটির ওজন কিছুটা বেশি হওয়ার কারণে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আনকমফরটেবল মনে হতে পারে অনেকের কাছে । এছাড়াও এই স্মার্টফোনটির ব্ল্যাক ডিসপ্লে ফিনিশিং ভালো দেওয়া হলেও প্রাইমারি ক্যামেরা কাটাউট আকারে অনেকটা বড় । এই বিষয়গুলো বাদে এই স্মার্টফোনটির বিরুদ্ধে কমপ্লেইন করার তেমন কিছু নেই ।


স্মার্টফোনটির প্রাইস


মার্কেটপ্লেসে এই স্মার্টফোনটিকে 21 সেপ্টেম্বর , 2021 প্রথমবারের মতো রিলিজ করা হয় । মার্কেটে রিলিজ করার সময় স্মার্টফোনটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে 15,000 টাকা । এক কথায় বলা যায় এই স্মার্টফোনটিকে রাখা হয়েছে মিড রেঞ্জের প্রাইস এর ভিতরে । এখানে একটি প্রশ্ন থেকেই যায় আর সেটি হল নির্ধারিত মূল্যে এই স্মার্টফোনটি গ্রাহকদের ঠিক কেমন পারফরম্যান্স দিতে পারবে ? পারফরম্যান্সের কথা  বলতে গেলে এই স্মার্টফোনটি মোটামুটি হাই কোয়ালিটির ভিতরে রয়েছে । আর সেটি আমরা স্পেসিফিকেশন দেখলেই বুঝতে পারবো । এই ডিভাইসটি মার্কেটে রিলিজ হওয়ার ফলে গ্রাহকরা পেয়ে যাবে কম খরচের মধ্যে একটি ভালো মানের স্মার্টফোন ব্যবহারের সুবিধা । ইনফিনিক্সের এই নতুন মডেলটিতে নির্ধারিত প্রাইস অনুযায়ী পারফরম্যান্স অনেকটাই ভালো বলে আমার কাছে মনে হয়েছে । কম খরচে হাতের মুঠোয় উন্নত মানের প্রযুক্তি যারা ব্যবহার করতে চান এই মডেলটি তাদের জন্য ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ ।









একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন