শাওমি 12 প্রো অফিশিয়াল মূল্য এন্ড ফিচার | MI 12 Pro full specification and Release date


এমআই কোম্পানিকে আমরা রেগুলার মিডিয়াম বাজেটে স্মার্টফোন রিলিজ করতে দেখি । মিডেল রেঞ্জের পাশাপাশি চাহিদা থাকার কারণে কোম্পানিটি মার্কেটে ফ্লাগশিপ টাইপের স্মার্টফোন রিলিজ করতে অনেকটা আগ্রহ প্রকাশ করছে । ইতিমধ্যে তারা মার্কেটে বেশকিছু ফ্লাগশিপ টাইপের স্মার্টফোন রিলিজ করেছে আর সেগুলোর ফিচার পারফরম্যান্স ভালো থাকার কারণে গ্রাহকরা সাদরে গ্রহণ করছে । মিডিয়াম রেঞ্জের পাশাপাশি ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন রিলিজ করার যে একটা কম্বিনেশন আমরা দেখতে পাই সে ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই শাওমি । কিছুদিন আগে তারা প্রিভিয়াস যে ফ্লাগশিপ মডেলটি মার্কেটে রিলিজ করেছিল সেটির নাম শাওমি 11 প্রো । রিসেন্টলি টাইমে শাওমির ধারাবাহিকতায় আমরা আরও একটি নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের দেখা পেয়ে যাবো মার্কেটে । মডেলটি হলো Xiaomi 12 pro । স্মার্টফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে রিভিউতে সেখানে আপনারা জানতে পারবেন এই স্মার্টফোনটির অ্যাডভান্টেজ এবং ডিজ অ্যাডভান্টেজ সাইট গুলো । 


শাওমি 12 প্রো অফিশিয়াল মূল্য এন্ড ফিচার | MI 12 Pro full specification and Release date


বডি ডিজাইন

স্মার্টফোনের বাহ্যিক কাঠামো অথবা আউটলুক স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার পূর্বশর্ত অর্থাৎ স্মার্টফোনটির আউটলুক যদি আপনার কাছে ভাল লেগে যায় তাহলে কিন্তু আপনি স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবেন । শাওমি 12 প্রো ডিভাইসটির আউটলুকের কথা যদি বলি তাহলে এই ডিভাইসটি নিঃসন্দেহে নজরকাড়া । মনমুগ্ধকর একটি সুন্দর ডিজাইন দেওয়া হয়েছে স্মার্টফোনটির বডিতে । সম্পূর্ণ বডিকে গরিলা গ্লাস অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম দিয়ে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে । 204 গ্রামের এই ডিভাইসটি কালো , সবুজ ছাড়াও আরো ভিন্ন কয়েকটি কালারে মার্কেটে পাওয়া যাবে । ডিভাইসটির বডি ডিজাইনের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে সেটি হল ডিভাইসটির সাউন্ড সিস্টেম । সাউন্ড সিস্টেমের জন্য এখানে চারটি স্পিকার দেওয়া হয়েছে । এটিকে একটি চমৎকার আপডেট বলে আমার কাছে মনে হয়েছে । যার কারণে সাউন্ড সিস্টেমে আপনি বেস্ট পারফরমেন্সটি খুঁজে পাবেন । এক হাতে ব্যবহার করার জন্য এটি আপনাদের কাছে পারফেক্ট বলেই মনে হবে । যদিও এখানে 3.5 এম এম হেডফোন জ্যাকটির দেখা পাওয়া যায়নি বাট বডির অন্যান্য অংশগুলোর পজিশন ঠিকঠাক বলেই মনে হয়েছে । 


ব্যাটারি ব্যাকআপ

ডিভাইসটির আরো একটি অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ব্যাটারি পাওয়ার । 4600 মিলি এম্পিয়ার সমপরিমাণের একটি non-removable ব্যাটারি ক্যাপাসিটি দেওয়া হয়েছে । আকর্ষণের বিষয়টি হচ্ছে ব্যাটারীটি চার্জ দেওয়ার জন্য বিশাল দ্রুতগতিসম্পন্ন 120 ওয়াটের চার্জিং ক্যাবল ব্যবহার করা হয়েছে । আমার দেখা ফাস্ট চার্জিং সিস্টেম স্মার্টফোনের মধ্যে এই ডিভাইসটি অন্যতম । যাই হোক এটি একটি ভাল দিক যেটি সবারই ভাল লাগার কথা । 120 ওয়াট এর ফাস্ট চার্জিং ক্যাবল এর মাধ্যমে আপনি 18 মিনিটের মধ্যেই ডিভাইসটিকে ফুল চার্জ করে নিতে পারবেন আর এমনটাই বলা হয়েছে কোম্পানি থেকে । এই বিষয়টা প্রায় অনেকের কাছেই হয়তো অবাক লাগতে পারে । এছাড়াও আপনি ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেম উপভোগ করতে পারবেন যার সাহায্য নিয়ে আপনি 50 ওয়াট দ্রুত গতিতে চার্জ করার সুবিধা পাবেন । ব্যাটারি পারফরমেন্স জাস্ট ওয়াও । এই বিষয়টি আমার কাছে ভালো লেগেছে । 

ডিসপ্লে ফিচার

এমোলেড টাইপ এর ডিসপ্লের নাম কাম সম্পর্কে আমাদের সকলেরই হয়তো কিছু না কিছু ধারনা রয়েছে । শাওমির নতুন ডিভাইসটিতেও আমরা অ্যামোলেড ডিসপ্লের দেখা পেয়ে যাই । যেখানে থাকছে 120 Hz রিফ্রেশ রেট । রিফ্রেশ রেট এর পরিমাণ খুব ভালো । আপনি আপনার প্রয়োজন মতো মিনিমাম 1 হার্জ থেকে 120 Hz পর্যন্ত বাড়িয়ে কমিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন যার জন্য ব্যাটারীতে তেমন কোনো চাপ পড়বে না । স্যামসাং এর ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি যথেষ্ট কালারফুল । ব্রাইটনেস এর পরিমাণ ভালো আউটডোরে পারফরম্যান্স ভালই পাওয়া যাবে । ডিসপ্লের প্রটেকশনের জন্য শক্তপোক্ত প্রটেক্টেদ কর্নিং গরিল্লা গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে । 6.73 ইঞ্চি সাইজের মোটামুটি বড়োসড়ো একটি ডিসপ্লে প্যানেল এখানে দেওয়া হয়েছে । ডিসপ্লের বেজেল বা চিন এরিয়া যথেষ্ট মানের ন্যারো বলেই মনে হয়েছে । 140×3200 পিক্সেল রেজুলেশন রয়েছে ডিসপ্লেতে । ডিসপ্লের এভারেজ পারফরম্যান্স চোখ জুড়ানো । 

ক্যামেরা পারফরম্যান্স

শাওমির প্রিভিয়াস স্মার্টফোনটিতে যে ক্যামেরা ডিজাইন আমরা দেখতে পেয়েছিলাম শাওমি 12 প্রো ডিভাইসটিতে আমরা তার থেকে ভিন্ন একটি ক্যামেরা ডিজাইন দেখতে পেয়েছি । এখন কথা হল ক্যামেরা পারফরম্যান্সে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সফল হবে কিনা ? ক্যামেরা পারফরম্যান্স এক নজরে দেখে নেওয়া যাক । মেইন ক্যামেরাসহ ত্রিপল রেয়ার আইটেমের একটি সমন্বয় পারফরম্যান্স এখানে দেখতে পাবো । মেইন সেন্সর এর পাশাপাশি এখানে একটি আল্ট্রা ওয়াইড এবং একটি টেলি ফটো সেন্সর দেওয়া হয়েছে , তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে তিনটি ক্যামেরা সেন্সরে 50 মেগাপিক্সেল করে 150 মেগাপিক্সেল দেওয়া হয়েছে । শাওমি আমাদের মাঝে যে কয়টি স্মার্টফোন রিলিজ করেছে সেগুলোর মধ্যে এই ডিভাইসটির ক্যামেরা ফাংশন আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । মেইন ক্যামেরা যথেষ্ট কালারফুল ছবি তুলতে সাহায্য করবে এবং আল্ট্রা ওয়াইড ফাংশনে ডায়নামিক রেঞ্জের পরিমাণ ভালো থাকার কারণে ভালো ছবি তোলা কঠিন কিছু মনে হবে না । এছাড়াও থাকছে নাইট মোড যেটির ফিচার ডিটেইল আপনাদের পছন্দ হবে বলে ধারণা করছি । সেলফি তোলার জন্য ফ্রন্ট ক্যামেরায় 32 মেগাপিক্সেল এর একটি ক্যামেরা কাটাউট রাখা হয়েছে ।

অপারেটিং সিস্টেম বা প্রসেসর

অপারেটিং সিস্টেমে গুগোল এর লেটেস্ট ভার্সন এন্ড্রয়েড 12 ব্যবহার করা হয়েছে যেটিকে আপনি চাইলে পরবর্তীতে গুগলের সাথেই আপডেট করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন । এবার কথা বলা যাক ডিভাইসটির প্রসেসর নিয়ে । স্মার্টফোনটিতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন এর প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm Snapdragon SM8450 । কোয়ালকম এর প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে তার মানে আপনি বুঝতেই পারছেন এখানে খুবই গর্জিয়াস হতে চলেছে অপারেটিং সিস্টেমের পারফরম্যান্স । একই সাথে আপনি বেশ কয়েকটি হাই কোয়ালিটি অ্যাপস বা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করতে পারবেন সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না । অ্যাপস ব্যবহার করার সময় ডিভাইসটিকে গরম হতে দেখা যাবেনা কারন এখানে একটি হাই কোয়ালিটির ব্যাটারি পাওয়া গেছে । যে প্রসেসরটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা মূলত একটি অক্টা কোর প্রসেসর । যার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ভোগ করতে পারব । 4 ন্যানোমিটার সাইজের ট্রানজেকশনে প্রসেসরটি যুক্ত করা হয়েছে । 


মেমোরি পারফরম্যান্স

স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফাস্টেস্ট গতি অথবা দ্রুত সম্পন্ন গতি পাওয়ার জন্য অবশ্যই মেমোরি পারফরম্যান্সের প্রয়োজন এটা আমরা সবাই হয়তো ভালভাবেই জানি । ভালো মানের মেমোরি পারফরম্যান্স ব্যতীত আপনি কিন্তু একটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে তেমন ভাল একটি স্পিড পাবেন না । তবে খুশির সংবাদ হলো একটি ডিভাইসকে ভালোভাবে রান করানোর জন্য যে মেমরী পারফরম্যান্সের প্রয়োজন তার থেকে ভালই এখানে আমরা পেয়ে যাব । ইন্টার্নাল মেমোরি রেম হিসেবে থাকছে দুইটি ভেরিয়েন্ট 8 জিবি এবং 12 জিবি । এক্সটার্নাল মেমোরি অর্থাৎ রোম হিসেবে থাকছে 128 জিবি এবং 256 জিবি । তবে অন্যান্য স্মার্টফোনের মতো এখানে মেমোরি কার্ড স্লট ব্যবহার করা যাবে না । যে মেমরী পারফরম্যান্স দেওয়া হয়েছে তাতে আমার মনে হয় না আলাদাভাবে কিছু প্রয়োজন । যার কারণে আমার কাছে মনে হয়েছে এটির অনুপস্থিতি আপনাদের তেমন কোনো সমস্যা সৃষ্টি করবে না । পরিশেষে বলা যায় মেমোরি পারফরমেন্সের উপর হতাশাটা আমার কাছে মনে হয় নি । 

কানেক্টিভিটি এবং সেন্সর

ফিফথ জেনারেশন নেটওয়ার্কের আওতায় এই স্মার্টফোনটি নাম লিখিয়েছে । সো আমরা সহজেই বুঝতে পারছি এই ডিভাইসটির মাধ্যমে আমরা ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সম্পন্ন স্পিড উপভোগ করতে পারব । ইভেন ফোর্থ জেনারেশন এর নেটওয়ার্ক স্পিড ভালো পাওয়া যাবে আশা করি । টোটালি নেটওয়ার্ক স্পিডে একধাপ এগিয়ে আছে এটা কিন্তু বলা যায় । এছাড়াও তারবিহীন যে নেটওয়ার্ক গুলো রয়েছে সেখানেও আমরা বেস্ট পারফরমেন্স খুজে পাব । ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট দেওয়া হয়েছে । সিকিউরিটি সেন্সর এর কি খবর ? একটি ফ্লাগশিপ টাইপের স্মার্টফোন সেখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি সিস্টেম থাকবে না এটা কি হয় । ডিসপ্লের নিচে অপটিক্যাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করা হয়েছে যেতে সাহায্য ক্ষমতাও আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । এছাড়াও অন্যান্য যে সিস্টেমগুলো রয়েছে সেখানেও আমরা সিকিউরিটি সিস্টেমের বেশ ভালো ডেভেলপমেন্ট দেখতে পেয়েছি । 

গেমিং পারফরম্যান্স

একটি ভাল মানের ডিসপ্লে , মোটামুটি হাই কোয়ালিটির ব্যাটারি ফিচার , মেমরি স্টোরেজে ভরপুর একটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে আমরা হ্যাপিলি ভাবেই অনলাইন গেম গুলো উপভোগ করতে পারব । অনলাইন জগতের যে গেম গুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে যদি আমরা ফেমাস গেম-প্লে খুঁজে বের করি তাহলে ফ্রী ফায়ার বা পাবজির কথাই সবার আগে আমাদের মাথায় আসবে । আর সেই অনলাইন গেম গুলো যদি আপনি এই ডিভাইসটির মাধ্যমে গেম প্লে করতে চান তাহলে সেটা আপনার জন্য কেমন সাফল্য বয়ে আনতে পারবে ? এমন একটা প্রশ্ন আপনার মনে আসতে পারে । ব্যাটারি পারফরম্যান্স ভালো থাকার কারণে আমরা গেম প্লে করার সময় এই স্মার্টফোনটি গরম হতে দেখব না । এছাড়াও থাকছে একটি অ্যামোলেড ডিসপ্লে যেখানে আমরা দারুন গ্রাফিক্সের দেখা পাবো । মোটামুটি একটি গেম প্লে করার জন্য উন্নতমানের প্রসেসর রয়েছে । সর্বোপরি আমরা বলতেই পারি অনলাইন গেম গুলো উপভোগ করার জন্য এই স্মার্টফোনটি আমরা পছন্দ করতেই পারি । 


প্রাইস বা মূল্য

এবার আমরা আলোচনা করব স্মার্টফোনটির মূল বিষয় নিয়ে । এই ডিভাইসটি ব্যবহার করার জন্য আমাদেরকে কত টাকা খরচ করতে হবে ? উপরের আলোচনায় আমরা জানতে পেরেছি স্মার্টফোনটির দুইটি ভ্যারিয়েন্ট রিলিজ করা হয়েছে । 24 এপ্রিল 2022 দেশে মার্কেটে স্মার্টফোনটি প্রথমবারের মতো রিলিজ হয় । 8/256 যে ভ্যারিয়েন্টটি রয়েছে সেটি ব্যবহার করার জন্য 99,999 টাকা গুনতে হবে । 12/256 যে ভ্যারিয়েন্টটি রয়েছে সেটির মূল্য মার্কেট নর্ধারণ করা হয়েছে 109,999 টাকা । যদি আপনি এই স্মার্টফোনটির অফিশিয়াল হ্যান্ডসেটটি ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে এই দুটি থেকে চয়েজ করতে হবে । এই স্মার্টফোনটির আনঅফিসিয়াল যে মডেল রয়েছে সেটির মূল্য 82,000 টাকা । 







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন