এইচপি পেভিলিওন এরো 13 ল্যাপটপ স্পেসিফিকেশন | hp pavilion aero 13 full specifications

মিনিমাল সাইজের ল্যাপটপ গুলো ব্যবহার করার প্রতি আমাদের অনেকেরই আগ্রহ কমবেশি রয়েছে । আমার মতো অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা স্লিমেস্ট ল্যাপটপ পছন্দ করে থাকেন । আর তাদের জন্যই HP ব্রান্ডের হাত ধরে মার্কেটে নতুন মডেল চলে আসলো Hp Pavilion Aero 13 । ল্যাপটপটি স্লিম থাকার কারণে আমাদের ব্যবহার করতে অনেকটাই সুবিধা হবে । ডেক্সটপ বা ল্যাপটপটি স্লিম এটা জানা গেল কিন্তু ল্যাপটপটির পারফরম্যান্স আসলে কেমন হবে সেটাই হলো আসল বিষয় । আর আমরা ঠিক ল্যাপটপটির পারফরম্যান্স সম্পর্কে আলোচনা করবো এই রিভিউতে । এছাড়াও ল্যাপটপটি যে বাজেটে রিলিজ করা হয়েছে সেই বাজেটে আসলে আমাদের পোষাবে কিনা সে বিষয়েও আলোচনা করা হবে । তাছাড়াও এইচপি আমাদের খুবই পরিচিত একটি ব্রান্ড নিয়মিতভাবেই তারা তাদের ল্যাপটপ বা পিসি গুলোকে মার্কেটপ্লেসে রিলিজ করে থাকে । প্রিভিয়াস মডেল গুলোতেও আমরা ভালো পারফরমেন্সের দেখা পেয়েছি এখন এখানে কি কি ফিচার রয়েছে সেটা দেখার পালা ।

এইচপি পেভিলিওন এরো 13 ল্যাপটপ স্পেসিফিকেশন | hp pavilion aero 13 full specifications

বডি ম্যাটেরিয়াল


hp ব্র্যান্ডের মিনিমামাল সাইজের এই ল্যাপটপটির যে ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন সেটা কিন্তু আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । ল্যাপটপটির ওজন মাত্র ১ কেজি যেটাকে আপনি একহাতেই ব্যবহার করতে পারবেন । এখানে বডি বিল্ডে আমরা অ্যালুমিনিয়ামের পরিবর্তে প্লাস্টিকের মেটেরিয়াল আবরণ দেখতে পেয়েছি , যার কারণেই ল্যাপটপটির ওজন কমিয়ে রাখতে পেরেছে কোম্পানিটি । এমনিতে আমি বলবো বডিবিল্ড ডেকোরেশনে চাকচিক্য বলতে কিছু একটা রয়েছে । যেটা আশা করি সকলের নজর কাড়তে সফল হবে । এবার আমরা মুভ অন করি সাউন্ড সিস্টেমে , hp ব্র্যান্ডের প্যাভিলিয়ন অ্যারো সিরিজ গুলোতে সচরাচর বি ইনডোর টিউন সাউন্ড সিস্টেম দেওয়া হয়ে থাকে । ডেক্সটপটিতে থাকছে অডিও জ্যাক এর পাশাপাশি স্ট্যারিও স্পিকার । যদিও সাউন্ড সিস্টেমে আমরা কিছুটা মেলোডির ঘাটতি দেখতে পাবো । বডির সাথে যে কীবোর্ড রয়েছে সেখানে কিন্তু আমরা লে আউটের পাশাপাশি বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউস করতে পারবো । ল্যাপটপটিকে কোম্পানিটি রোস গোল্ড কালারে মার্কেটে লঞ্চ করেছে যেটা দেখতে অনেকের কাছেই ভালো লাগবে বলে আশা করা যায় । 

ডিসপ্লে কোয়ালিটি


HP Pavilion Aero 13 মডেলের ল্যাপটপটিতে আমরা একটি বেস্ট কালারফুল ডিসপ্লের দেখা পেয়েছি । এখানে একটি সুইটেবল সাইজের ডিসপ্লে সাইজ দেওয়া হয়েছে যেটি মূলত 13.3 ইঞ্চির সাইজের বা 33.8 সেন্টিমিটার । অনেকটা ছোট ডিসপ্লের দেখা আমরা এখানে পেয়েছি । একটি ছোট সাইজের ডিসপ্লে অনেকেরই পছন্দ । এছাড়াও ডিসপ্লেটিতে ফুল এইচডি রেজুলেশন সাপোর্টেড রয়েছে 1200 × 1920 পিক্সেল রেজুলেশন । ডিসপ্লের অন্যতম দিক গুলোর মধ্যে এই দিকটি আমার কাছে ভালো লেগেছে । তবে আমরা যারা কনটেন্ট বা ভিডিও ওয়াচিং করে থাকি তাদের জন্য এই ডিসপ্লেটি মার্কেটের সেরা হতেই পারে । এছাড়াও আরও একটি বিষয় আপনাদের ভালো লাগার কথা আর সেটি হল ডিসপ্লেটিতে 400 নিটস ব্রাইটনেস রয়েছে । ব্যবহার করার সময় আমরা কিন্তু ডিসপ্লেটিতে Sharpness এর ঘাটতি দেখতে পাবো না । ডিসপ্লেটিতে আরো থাকছে 100% SRGB । বাজেট হিসেবে বলা যেতে পারে ল্যাপটপটির ডিসপ্লে ক্যাটাগরিতে আমরা বেস্ট পারফরম্যান্স খুজে পেয়েছি ।

অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর


ল্যাপটপের অফারেটিং সিস্টেমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা উইন্ডোজ ব্যবহার করতে দেখে থাকি । এই ল্যাপটপটির ক্ষেত্রও কিন্তু Windows 11 Home অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে । যে বিষয়টি আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটি হল উইন্ডোজ এর লেটেস্ট ভার্সন ব্যবহার করেছি hp কোম্পানিটি । এবার আমরা চলে আসি ল্যাপটপটির প্রসেসরে । সেখানে তাকালে আমরা দেখতে পারবো একটি উন্নত সমৃদ্ধ processor AMD Ryzen ব্যবহার করা হয়েছে । যেটার গ্রাফিক্স ডিজাইনে রয়েছে Vega 11 Graphics । একটি ভালো মানের প্রসেসর ব্যবহার করার কারণে ল্যাপটপটির মাধ্যমে আমরা কিন্তু খুব সহজেই যে কোন ব্রাউজিং করে নিতে পারব ফাস্টেস্ট গতিতে । অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার মতো পারফরমেন্স কোম্পানিটি দিয়েছে বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে । 

ব্যাটারি ব্যাকআপ 


একটি ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপের ল্যাপটপ ব্যবহার করার কমবেশি সকলের ইচ্ছা থেকে থাকে । অত্যন্ত দারুন পারফরম্যান্সের ব্যাটারি ব্যাকআপ এই ল্যাপটপটিতে আমরা দেখতে পেয়েছি । 43 ওয়াট আওয়ারের ব্যাটারি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে । ল্যাপটপটিকে চার্জ দেওয়ার জন্য 45 ওয়াটের একটি চার্জার এডাপটার রয়েছে । যার জন্য ল্যাপটপটি ফুল চার্জ হতে এক ঘন্টার কিছুটা সময় বেশি নিয়ে নিবে । আপনি যদি একেবারে নরমাল ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু টুকটাক ব্যবহার করেও প্রায় ছয় ঘন্টা বা তার বেশি সময় ব্যাকআপ পেয়ে যাবেন ফুল চার্জে । ল্যাপটপ ব্যবহার করে যারা টুকটাক কাজকর্ম করে থাকি সাধারণত তাদের একটু বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপের ল্যাপটপ প্রয়োজন হয়ে থাকে , তো আমি বলব তাদের জন্য এটি একটি বেস্ট ব্যাটারি ব্যাকআপ ল্যাপটপ হতে পারে । 

মেমোরি পারফরম্যান্স


আমরা যারা ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন কাজকর্ম করার জন্য বা বিভিন্ন প্রয়োজনে তাদের জন্য ল্যাপটপগুলোতে যদি একটু মেমোরি পারফরম্যান্স  বেশি হয়ে যায় তাহলে কিন্তু এটি একটি ভালো বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । তার কারণ হলো মেমোরি পারফরমেন্স যদি বেশি থাকে তাহলে আপনি ল্যাপটপের মাধ্যমে দ্রুত গতিতে এবং ফাস্টেস্ট স্পিডে কাজকর্ম সাড়তে পারবেন । অনেক সময় কিন্তু আমরা দেখে থাকি এই মেমোরি পারফরম্যান্স কম থাকার কারণে ল্যাপটপগুলো দিয়ে বেশ ভালো পারফরমেন্স পাওয়া যায় না । তো এখানে নতুন এইচপির ল্যাপটপটিতে আমরা কি পরিমাণ মেমোরি পারফরমেন্স পেয়েছি সেটা একটু দেখে নিই , ল্যাপটপটিতে 8 জিবি রেম এর সাথে থাকছে 512 জিবি রোম ব্যবহার করার সুযোগ । এটি দেখে কিন্তু আমরা বলতে পারি এখানে মেমোরি পারফরম্যান্স খুব ভালো দেওয়া হয়েছে । ল্যাপটপটির জন্য এটি একটি খুবই ভালো দিক । আমার কাছে পার্সোনালি মনে হয়ে থাকে যদি মেমোরি পারফরম্যান্স ভালো থাকে তাহলে যে কোন ল্যাপটপের মাধ্যমে আপনি কিন্তু কাজ করে অনেকটা মজা পাবেন । যেমনটা আমরা হয়তো দেখতে পারবো এই ল্যাপটপটির মধ্যে । 

গেমিং পারফরম্যান্স কেমন দিবে ?


একটি ভালো মানের ল্যাপটপ এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন গেমস উপভোগ করলেন এটা কিন্তু খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয় । কিন্তু অনলাইন থেকে গেমস গুলো খেলতে হলে ল্যাপটপগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আপডেট থাকতে হয় যেমন ধরুন প্রসেসর এবং ল্যাপটপের কোয়ালিটি । HP Pavilion Aero 13 ল্যাপটপটিতে আমরা যে প্রসেসর এর দেখা পেয়েছি সেটি মূলত একটি অনলাইন গেমিং প্রসেসর নয় । আপনি যদি ল্যাপটপটির মাধ্যমে টুকটাক গেম প্লে করতে চান তাহলে সেটা পারবেন কিন্তু আপনি যদি প্রফেশনাল ভাবে গেমপ্লে করতে চান বা গেম প্লে করে লাইভ স্ট্রিম করতে চান তাহলে এই ল্যাপটপটি আপনাকে বেস্ট পারফরমেন্স দিতে ব্যর্থ হবে বলে আমার ধারণা । তবে এভাবে আপনারা যখন টুকটাক গেম প্লে করবেন তখন কিন্তু ল্যাপটপটি ভালো সার্ভিস দিবে এবং এখানে আপনি ভালো মানের গ্রাফিক্স ডিজাইন উপভোগ করতে পারবেন । আশা করি বিষয়টি আপনারা ক্লিয়ার ভাবেই বুঝতে পেরেছেন । 

কাদের জন্য ল্যাপটপটি ভালো হতে পারে ?


অনেক স্টুডেন্ট এবং বিজনেসম্যান রয়েছে যারা তাদের স্টাডি এবং ব্যবসা করার কাজে একটি ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকে বা ব্যবহার করার জন্য মার্কেটপ্লেসে একটি ল্যাপটপ খুঁজে বেড়াচ্ছে । ঠিক তাদের জন্যই HP Pavilion Aero 13 ল্যাপটপটি মার্কেটে চলে এসেছে । লেখাপড়ার বিভিন্ন কাজে একটি ল্যাপটপ ব্যবহার হয়ে থাকে এবং একজন বিজনেসম্যান তার ব্যবসার সকল কর্মকান্ড ল্যাপটপে লিপিবদ্ধ করে রাখে এবং এই কাজগুলো স্মার্টফোন বা হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে করা কিন্তু অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে অনেক সময় । আপনি চাইলে কিন্তু সেই কাজগুলো এই ল্যাপটপের মাধ্যমে করতে পারবেন খুব সহজেই । আপনারা যারা তাদের ব্যবসা ভিত্তিক কর্মকাণ্ড এবং নিজস্ব কাজগুলো করার জন্য একটি ল্যাপটপ ব্যবহার করতে আগ্রহী তাদের জন্য অবশ্যই এই ল্যাপটপটি আমার পক্ষ থেকে সাজেস্ট থাকবে ব্যবহারের জন্য । এছাড়াও টুকটাক গেম প্লে , ভিডিও কন্টেন্ট প্লেব্যাক করা যাবে । আশা করি আপনারা এখন একটি ধারণা পেয়েছেন এই ল্যাপটপটি কাদের জন্য মার্কেটে সেরা হতে পারে এবং কাদের জন্য বিভিন্ন অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে । তবে দীর্ঘ সময় ব্যবহার করার জন্য এটি একটি পারফেক্ট ল্যাপটপ বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে । 

ল্যাপটপটির সুবিধা এবং অসুবিধা


উপরের আলোচনায় আমরা ল্যাপটপটির স্পেসিফিকেশন দেখতে পেয়েছি এবং সেখান থেকে অনেকেরই একটি ধারণা হয়েছে ল্যাপটপটির মাধ্যমে আমরা কি কি সুবিধা এবং কি কি অসুবিধা পেয়ে যাব । সবার প্রথমেই বলে রাখি ল্যাপটপটির ডিজাইন এবং কোয়ালিটি কিন্তু খুব ভালো । আকৃতি এবং গঠনের দিক দিয়ে যদি বলি তাহলে ল্যাপটপটি খুব সহজেই ব্যবহার যোগ্য এই ডিভাইসটি । এছাড়াও আরও একটি সুবিধা রেখেছে কোম্পানিটি । আর সেটা হলো ল্যাপটপটিতে কোম্পানিটি 3 বছরের ওয়ারেন্টি দিয়ে দিয়েছে । এছাড়াও ব্যাটারি সংক্রান্ত আরো বেশ কিছু কন্ডিশন রয়েছে যেগুলোর ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে 1 বছর । অপরদিকে আমরা যারা গেমিং ইফেক্ট এর জন্য এই ল্যাপটপটিকে বেছে নিব তাদের জন্য কিন্তু আসলে এই ল্যাপটপটি নয় । এছাড়া অন্যান্য যে পারফরমেন্স যেমন  ব্যাটারি পাওয়ার , অপারেটিং সিস্টেম বা প্রসেসর , ইত্যাদি যে দিকগুলো রয়েছে সেখানে কিন্তু আমরা কিছুটা হলেও আপডেট লক্ষ্য করতে পেরেছি । 

প্রাইস বা মূল্য


দেশীয় মার্কেট প্লেস গুলোতে HP ব্রান্ডের ল্যাপটপ গুলোর বেশ ভালো জনপ্রিয়তা আমরা দেখতে পেয়ে যাই । অনেকদিন যাবৎ আগে থেকেই কোম্পানিটি আমাদের মাঝে তাদের সিরিজ গুলোকে রেগুলারলি আপডেট করে যাচ্ছে । HP Pavilion Aero 13 রিসেন্টলি আমাদের মাঝে চলে এসেছে এবং বাংলাদেশের মার্কেটপ্লেস থেকে ল্যাপটপটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে 84,500 টাকা । সচরাচর অন্যান্য ল্যাপটপগুলো থেকে এই ল্যাপটপটির প্রাইস আমরা অনেকটাই ডাউন দেখতে পেয়েছি এবং পারফরম্যান্সেও মোটামুটি ভালই মনে হয়েছে । ভারতের মার্কেটপ্লেসে এই ল্যাপটপটির মূল্য রয়েছে 79,999 রূপি । এছাড়াও আপনি যদি ল্যাপটপটিকে আন্তর্জাতিক মার্কেট থেকে ক্রয় করতে চান তাহলে আপনাকে খরচ করতে হবে 650$ । এছাড়াও নিত্য নতুন প্রযুক্তির সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো নিয়ে মোবাইল ল্যাপটপ রিভিউস ওয়েবসাইটটি আপনাদের মাঝে চলে আসে এবং এই ল্যাপটপটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন । 

 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন