ওপ্পো রেনো ৮ টি ফাইভ জি ফুল বাংলা রিভিউ | Oppo Reno 8T Specification And Review

সুনামধন্য বেশ কিছু কোম্পানি বা ব্রান্ড রয়েছে যেগুলো আমাদের মাঝে প্রতিনিয়ত তাদের নিত্যনতুন স্মার্টফোনের মডেল আপডেট করে থাকে । বর্তমান এই সময়ে কমবেশি আমাদের সকলেরই পরিচিত একটি ব্র্যান্ড হলো oppo । কোম্পানিটি তাদের গ্রাহকদের জন্য নতুন নতুন মডেল মার্কেটে আপডেট করে থাকে এবং ভবিষ্যতেও করবে । আমাদের মধ্যে যারা ওপ্পো লাভার রয়েছে তাদের জন্য আরও একটি সুখবর নিয়ে আপনাদের মাঝে নতুন একটি রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি মোবাইল ল্যাপটপ রিভিউস ওয়েবসাইটের মাধ্যমে । তো আজকে আপনাদের মাঝে বিশাল একটি ধামাকা নিয়ে হাজির হয়েছি আর সেই ধামাকায় আলোচনা করা হবে ওপ্পো ব্রান্ডের নতুন একটি স্মার্ট ফোন সম্পর্কে । এই রিভিউর সাথে থেকে নতুন স্মার্টফোনটি সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ রিভিউ জুড়ে থাকুন । 5 জি গতিসম্পন্ন আরও একটি স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করলো oppo কোম্পানিটি । আজকের এই রিভিউতে যে স্মার্টফোনটি নিয়ে আলোচনা করা হবে সেই মডেলটির নাম হল Oppo Reno 8T 5G । এবার কথা না বাড়িয়ে আমরা স্মার্টফোনটির পারফরমেন্সের আলোচনায় চলে যাই । 


ওপ্পো রেনো ৮ টি ফাইভ জি ফুল বাংলা রিভিউ | Oppo Reno 8T Specification And Review


বডি ডিজাইন


oppo কোম্পানিটি এর আগেও লেদার ফিনিশিং এর আরো বেশ কয়েকটি স্মার্টফোন মার্কেটে রিলিজ করেছিল তবে আপনারা জেনে আরো একটু বেশি খুশি হবেন যে Oppo Reno 8T 5G স্মার্টফোনটি ও কিন্তু লেদার ফিনিশিংয়ের । লেদার ফিনিশিং হওয়ার কারণে এর আকর্ষণীয়তা কিন্তু অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে । যার কারণেই স্মার্টফোনটি দেখতে অনেকটাই নজর কারা এবং মনোমুগ্ধকর , আর এমনটাই আমার কাছে পার্সোনালি মনে হয়েছে । স্মার্টফোনটিকে মার্কেটে তিনটি ভেরিয়েন্ট কালারে পাওয়া যাবে ব্ল্যাক , ব্লু এন্ড গোল্ড । হ্যান্ডসেটটি ওজনে বেশি ভারী নয় যার কারণে একহাতেই হ্যান্ডেল করা যাবে খুব সহজে । তবে একটি বিষয় আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে স্মার্টফোনটি যেহেতু লেদার ফিনিশিংয়ের সেহেতু এটি খুব সহজেই স্কেচ বা দাগ লেগে যেতে পারে । আর এই কারণে আমাদেরকে ব্যবহার করার সময় কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে । স্মার্টফোনটির বডি ডিজাইন আলোচনায় আমরা এটা কিন্তু বলতে পারি যে স্মার্টফোনটির বডি ডিজাইন বা বডি লুক আসলেই অসাম আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে ।


ব্যাটারি ব্যাকআপ


এক নজরে আমরা একটু আলোচনা করে ফেলি Oppo Reno 8T 5G স্মার্টফোনটিতে আমরা ব্যাটারি পারফরম্যান্স কেমন পেয়ে যাব । হ্যান্ডসেটটিতে থাকছে নন রিমুভেবল লিথিয়াম পলিমার টাইপের ব্যাটারি । আর এখানে দেওয়া হয়েছে 4800 মিলি এম্পিয়ার পাওয়ার । মোস্ট ভ্যালুয়েবল বা গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল স্মার্টফোনটির সাথে আমরা যে চার্জার ক্যাবল পেয়ে যাব সেটি মূলত 67 ওয়াটের ফার্স্ট চার্জিং সাপোর্টেড ক্যাবল । আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই আশাবাদী যে এই বিষয়টি আপনাদের কম বেশি সকলের কাছেই ভালো লাগার কথা । তবে ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ক্ষেত্রে যে বিষয়টি আমরা মিসিং দেখতে পেয়েছি সেটি হচ্ছে এখানে আমরা ওয়্যারলেস বা তারবিহীন চার্জিং সিস্টেমের কোন আবাস দেখতে পাইনি । তবে একটি বিষয় আমরা অনেকটাই সন্তুষ্ট আর সেটি হচ্ছে কুইক চার্জিং সিস্টেম । আমরা যারা স্মার্টফোন বা মুঠোফোন বেশি ব্যবহার করে থাকি তাদের জন্য এটি একটি ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারবে বলে আমি আশা করছি । 


ক্যামেরা পারফরমেন্স


oppo কোম্পানিটি আমাদের কাছে ক্যামেরা পারফরমেন্সের জন্য অনেক আগে থেকেই সুপরিচিত একটি ব্রান্ড । আর এই কারণেই কিন্তু অনেক ফটোগ্রাফার রয়েছে যারা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফটোগ্রাফি করে থাকে তারা অনেকেই oppo স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকে । Oppo Reno 8T মডেলটি তাদের গ্রাহকদেরকে ক্যামেরা পারফরমেন্সে কি কি অফার করেছে সে বিষয়ে একটু জেনে নেওয়া যাক । মডেলটির প্রাইমারি ক্যামেরা সেকশনে 108 মেগাপিক্সেলের একটি উন্নত মানের ওয়াইড সেন্সর রাখা হয়েছে যেটা অনেকটাই আমাদেরকে আকৃষ্ট করতে পারবে । এক কথায় বলা যেতে পারে প্রাইমারি সেকশনের ওয়াইড সেনসরটি নিয়ে আমরা সন্তোষজনক মনোভাব প্রকাশ করতে পারি । এরপরে মাইক্রোস্কোপ ক্যামেরা সেন্সরে 2 মেগাপিক্সেল রাখা হয়েছে যেটা সাহায্যে আমরা ছোট ছোট জিনিসগুলোকে বড় আকারে ধারণ করতে পারব এই স্মার্টফোনটি দিয়ে । তবে এখানে কিন্তু একটি কথা থেকে যায় সেটি হল মিড রেঞ্জের একটি স্মার্টফোনে আমরা আল্ট্রা ওয়াইড সেন্সর থাকার আশা করতেই পারে তবে এখানে কিন্তু সেটি থাকছে না । সেলফি তোলার জন্য সামনের ক্যামেরায় থাকছে 16 মেগাপিক্সেলের একটি শুটার । আরো একটি ভালো বিষয় হচ্ছে ক্যামেরাগুলো Full HD রেজুলেশন সাপোর্টেড হওয়ার কারণে আমরা খুব সহজে ক্লিয়ার ভাবেই ফটোগ্রাফি করে নিতে পারব এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবো । 


ডিসপ্লে টাইপ


একটি স্মার্টফোনে যত উন্নত সমৃদ্ধ ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেই স্মার্ট ফোনটি কিন্তু দেখতে ততটাই আকর্ষণীয়তা লাভ করে এটা হয়তো আমরা প্রায় অনেকেই জানি । Oppo Reno 8T স্মার্টফোনটিতে 6.7 ইঞ্চি সাইজের একটি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে । যেটাকে আকারের ক্ষেত্রে অনেকটা পারফেক্ট বলা যেতে পারে । ডিসপ্লেটি মূলত একটি OLED টাইপের ডিসপ্লে যেখানে সাপোর্টেড করবে 1080×2412 ফুল এইচডি রেজুলেশন । 120 হার্জ রিফ্রেশ রেট এর সাথে রয়েছে 950 নিটস ব্রাইটনেস । যার কারণে অল্প আলো কিংবা বেশি আলোতে স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার সময় তেমন কোন অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না । পিক্সেল ডেনসিটির পরিমাণ রাখা হয়েছে 394 ppi । স্মার্টফোনটির সৌন্দর্য কিংবা আকর্ষণীয়তা বৃদ্ধি করার জন্য ডিসপ্লের পজিশন কিছুটা এগিয়ে রয়েছে বলে আমি ধারণা করছি । ডিসপ্লে দের নমনীয়তা বৃদ্ধিতে যে বিষয়টি ব্যাপক পরিমাণে ভূমিকা পালন করেছে সেটি হচ্ছে এর চিন এবং বেজেল । ডিসপ্লেটির চিন এবং বেজেলের পরিমাণ অনেকটা ন্যারো রাখা হয়েছে যে কারণে দেখতে অনেকটাই অ্যাটরেক্টিভ বা বিউটিফুল বলা যায় । 


প্রসেসর কোয়ালিটি


স্মার্টফোনটি নিয়ে আলোচনার মূল টপিক বা বিষয় হচ্ছে এর প্রসেসর বা হার্ডওয়ার । মোটামুটি মিডিয়াম বাজেটে ঢাকা এই স্মার্টফোনটির ভিতরে ওপ্পো কোম্পানিটি কেমন প্রসেসর ব্যবহার করেছে সেটা একটি জানার বিষয় । কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন 695 5G প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে যেটার মডেল হল Qualcomm SM6375 । প্রসেসরটি মূলত 6 ন্যানোমিটারের তৈরি । এখন জানার বিষয় হলো oppo কোম্পানিটি আমাদের মাঝে সেম বা একই প্রসেসরের আরো বেশ কিছু স্মার্টফোন আরো আগেই মার্কেটে এনেছিল । এছাড়াও আরেকটি বিষয় বলে রাখি সেম বাজেটের ভিতরে আপনি এর চেয়ে কিছুটা ভালো মানের প্রসেসরের স্মার্টফোন মার্কেটে কিন্তু এভেলেবল পেয়ে যাবেন । এই প্রসেসরের মাধ্যমে আমরা অনেক ভালো কিছু আশা করতে পারি এমনটাও নয় আবার একেবারে নরমাল রেজাল্ট পেতে পারি এমনটাও কিন্তু নয় । ফিচারের লেভেল অনেকটা মিডিয়াম পাওয়া যাবে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে । ডিভাইসটির প্রসেসরকে রানিং করানো হয়েছে google এর এন্ড্রয়েড ভার্সন 13 এর মধ্য দিয়ে । অপারেটিং সিস্টেমের দিক দিয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে স্মার্টফোনটি । 


RAM এবং ROM


ইন্টারনাল এবং এক্সটার্নাল মেমোরি পারফরম্যান্সের যে বিষয়টি এটি কিন্তু অন্যতম মূল্যবান একটি টপিক । মেমোরি পারফরম্যান্স যত বেশি ভালো হবে একটি স্মার্ট ফোনকে কিন্তু তত বেশি উন্নত সমৃদ্ধ বলা হয়ে থাকে । OPPO তাদের এই মডেলটিতে ইন্টারনাল স্টোরেজ বা রেম ব্যবহার করেছে 8 GB । এটি কিন্তু অনেকটাই হিউজ বা বিশাল মেমোরি পারফরম্যান্স আমরা বলতে পারি । এছাড়াও থাকছে ওটিজি কেবল ব্যবহারের সুযোগ অর্থাৎ আপনার যদি বাড়তি রেম ব্যবহারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু ওটিজি ক্যাবল ব্যবহার করে আরো 8 জিবি বাড়িয়ে ব্যবহার করতে পারবেন । এটাকে এক কথায় আউটস্ট্যান্ডিং পারফরমেন্স আমরা বলতে পারি । এক্সটার্নাল মেমরি পারফরমেন্সে আমরা দেখতে পেয়েছি 128 জিবি । মেমোরি পারফরম্যান্স ভালো থাকার কারণে আমরা কিন্তু একটি বিষয়ে খুব ভালোই সুবিধা পেতে পারি আর সেটি হল ইন্টার্নাল এবং এক্সটার্নাল স্টোরেজ ভালো থাকার কারণে দারুন লেভেলের মাল্টিটাস্কিং এর সুবিধা পেয়ে যাব । এছাড়াও পাওয়া যাবে ফার্স্ট স্পিডের টাচ রেসপন্স । 


গেমিং পারফরমেন্স


বর্তমান সময়ে প্রায় সকলের মাঝেই অনলাইন গেমিং এর সমারোহ দেখতে পাওয়া যায় । অনলাইন গেমিং গুলোর মধ্যে বর্তমান সময়ের ফেভারিট বেশি কিছু অনলাইন গেমস রয়েছে সেগুলোর মধ্যে আমাদের কাছে ফ্রী ফায়ার এবং পাবজি একটু বেশি জনপ্রিয় । একটু ভালোভাবে যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাবো অনেকেই কিন্তু এখন হাতে থাকা স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনলাইন গেমিং করে থাকে । এখন আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন কড়া নাড়তে পারে যে Oppo Reno 8T স্মার্টফোনটি দিয়ে আপনারা অনলাইন গেমিংয়ে কেমন পারফরমেন্স পাবেন ? মোটামুটি মিডিয়াম রেঞ্জ বাজেটে আপনি যদি একটি অনলাইন গেমিং স্মার্টফোন ব্যবহার করতে চান তাহলে এই স্মার্টফোনটি ব্যবহার করতে পারেন । ফ্রী ফায়ার এবং pubg বোথ অফ অনলাইন গেমগুলো  গেম প্লে করার সময় ফুল এইচডি গ্রাফিক্স ডিজাইন আমাদের চোখে পড়বে । এছাড়াও দীর্ঘক্ষণ গেম প্লে করার পর স্মার্টফোনটি গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম রয়েছে । ভালো মানের ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকার কারণে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে আপনারা প্রিমিয়াম একটি অনলাইন গেমিং পারফরম্যান্স খুঁজে পেতে পারেন বলে আমি সহমত পোষণ করছি ।


স্মার্টফোনটির মূল্য


পরিশেষের আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের মাঝে একটি বিষয় ক্লিয়ার করে দেওয়া যাক আর বিষয়টি হল অপ্পো কোম্পানির Reno 8T সিরিজটি আপনার হাতের মুঠোয় নেওয়ার জন্য আপনাকে কত টাকা খরচ করতে হতে পারে ? ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে এই স্মার্টফোনটির মূল্য বর্তমান সময়ে নির্ধারণ করা হয়েছে $365 ডলার । বাংলাদেশের মার্কেটপ্লেসে এই স্মার্টফোনটি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে ৳40,000 টাকা । ইতালিতে এই স্মার্টফোনটির মূল্য রয়েছে 340 ইউরো ।
ভারত থেকে স্মার্টফোনটি ক্রয় করা যাবে 29,999 রুপি দিয়ে । মালয়েশিয়ান মার্কেট প্লেসে এই স্মার্টফোনটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে 1280 রিংগিত । এই স্মার্টফোনটির ফুল স্পেসিফিকেশন সহ স্মার্টফোনটির প্রাইস ডিটেল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে । আমাদের রিভিউটির সাথে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং এই স্মার্টফোনটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সুবিধা এবং অসুবিধা আপনাদের পার্সোনাল মতামত গুলো কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না । 
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন